#হাওড়া: হাওড়ায় জঞ্জালের ভাগাড় থেকে মুক্তি পেতে চলছে পুরবাসীরা। হাওড়া পুরসভার ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের মধ্যে অবস্থিত বেলগাছিয়া ভাগাড় যেন হয়ে উঠেছিল পর্বতশৃঙ্গ। দূর থেকে দেখে মনে হত জঞ্জালের স্তুপ নয়, এ যেন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া বা কখনও মনে হতো উত্তরবঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড়চূড়া। জঞ্জালের পাহাড় থেকে ছড়ানো দূষণ এলাকার মানুষের নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। এমন কি নতুন করে জঞ্জাল ফেলার জায়গাও পাওয়া যায় না এই এলাকায়। এই সবের থেকে মুক্তি পেতে উদ্যোগী হল হাওড়া পুরসভা ও রাজ্য সরকার।
advertisement
হাওড়া শহরের একমাত্র জঞ্জাল ফেলার জায়গা বেলগাছিয়া ভাগাড় ভরে গিয়েছে জঞ্জালে। বছরখানেকের মধ্যেই এই ভাগাড়ের জঞ্জাল ফেলার মতো অবস্থা আর থাকবে না। ভাগাড়ের বহন ক্ষমতা কমে যাওয়ায় যে কোন মুহুর্তে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে এলাকার বাসিন্দারা। ভেঙে পড়তে পারে পাহাড় প্রমাণ ভাগাড়টি। ভাগাড়টি ধসে পড়লে তা থেকে ঘটতে পারে বড়সড় দুর্ঘটনা। এই দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য সরকার। বায়ো-মাইনিং পদ্ধতিতে ভাগাড় থেকে জঞ্জাল সরানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। হাওড়া পুরসভা এই কাজ করবে। এর জন্য সরকারী অনুমোদন ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, প্রায় ১৮ একর জমির ওপর হাওড়ার বেলগাছিয়া এই ভাগাড়। এই ভাগাড়ের উচ্চতা প্রায় ৬০ ফুট। এই ভাগাড়ের পাশ্ববর্তী এলাকায় মানুষের বসবাস। এখানে রয়েছে একটি হোমিওপ্যাথি কলেজ ও হাসপাতাল। আছে অনেক দোকানও। দীর্ঘদিন ধরে এই ভাগাড়ে জঞ্জাল ফেলায় এর বহন ক্ষমতা গিয়েছে কমে। এই কারণে জঞ্জাল ফেলার জন্য পুরনো ভাগাড়ের পাশে তৈরি হয়েছে নতুন একটি ভাগাড়। সেই ভাগাড়ে প্রতিদিন ফেলা হয় প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন জঞ্জাল। সরকারী হিসেব অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে এই নতুন জঞ্জালের বহন ক্ষমতা কমে যাবে। ফলে জঞ্জাল ফেলার জায়গা থাকবে না। সেই কারণে ভাগাড়ের জঞ্জাল সরানোর জন্য অত্যাধুনিক বায়ো-মাইনিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর আগে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরেও জঞ্জাল অপসারনের জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছে। আনুমানিক ফেব্রুয়ারী থেকে বায়ো মাইনিংয়ের কাজ শুরু হবে। এর জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে।
কী উপায়ে এই পর্বতপ্রমান জঞ্জাল প্রমান জঞ্জাল সরানো হবে? এই ব্যাপারে পুরসভা জানিয়েছে, ভাগাড়ে প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে সেখানে মেশিন বসিয়ে ওপর থেকে জঞ্জাল তোলা হবে। পরে সেই জঞ্জাল থেকে মাটি এবং আবর্জনা আলাদা করা হবে। তারপর মাটি অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হবে। এতে ভাগাড়ের উচ্চতা কমবে। এই ভাগাড় এলাকায় সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থা চালু করার ভাবনাচিন্তা করছে বলেও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।