পুরীতে সম্প্রতি রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছিলেন পরিযায়ী শ্রমিক মিঠুন। সোমবার জিরাট থেকে তারাপীঠের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। একটি ব্যাগে তারা মায়ের ছবি আর প্রয়োজনীয় জিনিস, পরনে গেরুয়া পোশাক, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা পরে পথে বেরিয়ে পরেছেন।
advertisement
এই যাত্রায় মিঠুন পেয়েছেন কিছু মানুষের সাহায্য। কেউ কিনে দিয়েছে ফুল, ফল। এতটা পথ দণ্ডি কাটতে সারা শরীরে ব্যথা হবে। তাই ব্যথা উপশমের স্প্রে কিনে দিয়েছেন কেউ, আবার কেউ কিনে দিয়েছেন ওষুধ, খাবার। যাতে পথে কোনও অসুবিধা না হয়।
আরও পড়ুন: ট্রেনের টয়লেটে এই ‘কাজ’ করছিলেন তিনি…! পরমুহূর্তেই যা ঘটল, প্রকাশ্যে এল আসল ‘সত্যি’!
মা, স্ত্রী ও আট বছরের সন্তান রয়েছে মিঠুনের সংসারে। মিঠুনের স্ত্রী তাপসী মালিক বলেন, তিন চার বছর ধরে তাঁর মনের ইচ্ছে তারা মায়ের কাছে যাবে দণ্ডি কেটে। কিন্তু আর্থিক কারণে যেতে পারেনি। তবে এবারে মনের জোর আর কুড়ি টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছে। মা কিনে দিয়েছেন জামা প্যান্ট। ঈশ্বরের উপর আমাদের সম্পূর্ণ ভরসা রয়েছে, তাই স্বামীর জন্য কোনও চিন্তা হবে না। তারা মা আছেন তিনিই রক্ষা করবেন।
রাস্তায় বেরিয়ে মিঠুনকে দণ্ডি কেটে যেতে দেখে বলাগড়ের সোমড়ার বাসিন্দা ভাস্কর হালদার-সহ তাঁর বন্ধুরা। বাইক থেকে নেমেই ফুলের মালা পরিয়ে কিছু খাবার কিনে দেন তাঁরা। ভাস্কর জানান, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ দেখি ওঁকে। তাই মনোবল বাড়াতেই পাশে দাঁড়ানো।
নিজের ইচ্ছার জোড়েই মিঠুন এগিয়ে চলেছে। রাস্তায় যাতে তাঁর কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য আমরা তাঁকে কিছু আর্থিক সাহায্য করেছি। আশা করব সে যে উদ্দেশ্য নিয়ে বেরিয়েছে সেটা যেন সফল হয়।
মিঠুন বলেন, “স্বপ্ন ছিল তারাপীঠ যেতে হলে দণ্ডি কেটেই যাব। সেই উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছি। ওড়িশায় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের কাছে রাজমিস্ত্রির কাজ করি। সেখান থেকে গত ১০ দিন আগে ফিরেছি। এর আগে কোনদিনও যাইনি তারাপীঠ,অনেকে বলছে প্রায় ২০০ কিলোমিটার রাস্তা। ফোনের লোকেশন দেখে এগিয়ে যাচ্ছি। অনেকেই আমার পাশে দাঁড়িয়েছে , সাহায্য করছে। ঝড়, বৃষ্টি যাই আসুক মা-ই রক্ষা করবে, তিনিই আমাকে নিয়ে যাবেন তাঁর দুয়ারে।”
সোমনাথ ঘোষ/ বলাগড়
