সেই সমস্ত পরিবারে দিকে তাকিয়ে গঙ্গাধরপুর বিবেকানন্দ গ্রন্থাগারের স্বাস্থ্য পরিষেবা সূচনা হয় কয়েক দশক আগে। সেখানেই মাত্র কুড়ি টাকার বিনিময়ে নাম নথিভুক্ত করে বিশিষ্ট চিকিৎসক দেখিয়ে শরীরের রোগ নির্ণয়। সেই সঙ্গে নামি কোম্পানির ওষুধ পেয়ে থাকেন মানুষ। যে কারণে গঙ্গাধরপুর গোন্ডলপাড়া দেউলপুর জুজারসাহা সহ আশপাশের ১৫-২০ টি গ্রামের মানুষের ও পরিবারের ভরসা এই স্বাস্থ্য পরিষেবা।
advertisement
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
সে সময় গ্রামের মানুষ অধিকাংশই কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত কুটির শিল্প এবং শ্রমিক। অন্যান্য পেশার সঙ্গে যুক্ত বা চাকরিজীবী যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা সচল সেই সংখ্যা হাতে গনা কয়েকটি। হাওড়া শহর থেকে ৩৫- ৪০ কিমি দূরত্বে পাঁচলা’র গঙ্গাধরপুর গ্রাম। ১৯৭৮ সালের বন্যা পরবর্তী সময় গ্রামে ভয়াবহ অবস্থা। শহরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা অতি দুর্গম। গ্রামের মানুষের পক্ষে দিনে দু’বেলা খাবার যোগানো দারুণ কঠিন। চিকিৎসা পরিষেবা নেওয়ার অবস্থা আরও শোচনীয় অবস্থা ছিল। সে সময় এলাকার কিছু মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে গঙ্গাধরপুর বিবেকানন্দ গ্রন্থাগারের মাধ্যমে চিকিৎসা পরিষেবা শুরু করেন। সেই সূচনা হয়েছিল, তার পর থেকে চিকিৎসা পরিষেবায় নানা সংযোজন হয় এখানে। ২০০০ সালের পর হাওড়া এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় বিশিষ্ট চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা পরিষেবা শুরু হয় এখানে।
এই পরিষেবা যত সুষ্ঠু হয়েছে, ততই প্রচার বেড়েছে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে পরিষেবা নিতে শুরু করে। বর্তমানে মাসে দু’দিন ৫০ থেকে ৬০ জন মানুষ পরিষেবা পেয়ে থাকেন। যেখানে চিকিৎসা পরিষেবা অত্যান্ত ব্যয়বহুল পাস করা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ৪০০ বা ৫০০ টাকা ফ্রিজ দিতে হয়, তারপর ওষুধ খরচ। একসঙ্গে এতগুলো টাকা খরচ করে চিকিৎসা পরিষেবা অসম্ভব বহু মানুষের কাছে। তাই মাত্র কুড়ি টাকা’য় এই স্বাস্থ্য পরিষেবা দারুণ জনপ্রিয়।
আরও পড়ুন Success Story: অনুপ্রেরণার অপর নাম জগন্নাথ! প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে পা দিয়ে লিখেই কলেজে ভর্তির আবেদন
বর্তমানে হোমিওপ্যাথি ও অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসার পাশাপাশি চোখের চিকিৎসা এখানে নির্ভরযোগ্য। এ প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠান সম্পাদক সুজিত কুমার মান্না জানান, প্রায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা। এক সময় গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরি বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শিক্ষার আলো জ্বালাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এই প্রতিষ্ঠান। কালের নিয়মে লাইব্রেরি বা পাঠাগারের গুরুত্ব কমেছে। অন্যদিকে চিকিৎসা পরিষেবায় আরও প্রসারিত হয়েছে গঙ্গাধরপুর বিবেকানন্দ গ্রন্থাগারের পরিষেবা। এই সংগঠনের সম্পাদক ডাঃ আশীষ ঘোষ জানান, চিকিৎসা পরিষেবার পাশাপাশি গ্রামের মানুষের কাছে বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বহু দরিদ্র পরিবার থেকে ১৫ দিন অন্তর রবিবারে এখানে চিকিৎসা করতে আসেন বহু মানুষ।
রাকেশ মাইতি





