এর আগে সড়ক পথে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার পথে বর্ধমান সার্কিট হাউসে বিশ্রাম নিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেদিক দিয়ে এটাই প্রথম বর্তমান রাজ্যপালের বর্ধমান সফর। মূলত পুজো দিতেই এদিন বর্ধমানে এসেছেন রাজ্যপাল। এর আগে এম কেনারায়নন রাজ্যপাল থাকাকালীন ফি বছর শিবরাত্রিতে বর্ধমানে আসতেন। গোলাপবাগে বিজয়বাহারে তিনি রাজ আমলে প্রতিষ্ঠিত শিব মন্দিরে রাত কাটাতেন। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত থাকতেন বর্ধমানের মহারাজ কুমার প্রণয়চাঁদ মহাতাব ও তাঁর স্ত্রী নন্দিনী মহাতাব।
advertisement
শিবের পুজো দিতে এবার বর্ধমানে এলেন বর্তমান রাজ্যপাল। নামে একশো আট শিব মন্দির। আসলে মন্দির রয়েছে একশো নটি। জপমালার মতো আছে একশো আটটি মন্দির। বাকি একটি একটু দূরে, গলার হারে লকেটের মতো। বর্ধমানের একশো আট মন্দিরের খ্যাতি এখন ভারত জোড়া। সারা বছর দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন।
বর্ধমানের মহারানি বিষণকুমারীর বর্ধমানের নবাবহাটে ১০৮ শিবমন্দির প্রতিষ্ঠার এক দীর্ঘ ইতিহাস আছে। এই মন্দিরের নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে। শেষ হয়েছিল ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে। সেই সময় বর্ধমান সংলগ্ন নবাবহাট এলাকায় মহামারি দেখা দিয়েছিল। বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। স্বজনদের হারিয়ে শোকে মুহ্যমান হয়ে গিয়েছিলেন এই এলাকার বাসিন্দারা। এলাকায় মন্দির গড়ে বাসিন্দাদের ঈশ্বরমুখী করে তাঁদের শোক ভোলাতে চেয়েছিলেন বর্ধমানের মহারানিমা। সেই ভাবনা থেকেই নবাবহাটে এই একশো আট শিব মন্দির গড়েন তিনি। মহাআড়ম্বরে সেই মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়।
জপমালার আদলে ১০৮টি এবং অতিরিক্ত আর একটি, মোট ১০৯টি স্থাপত্যকে গেঁথে প্রতিষ্ঠা করা হয় এই মন্দির। এই মন্দিরমালা বর্ধমানের এক অনন্য শিল্পকীর্তি। এই ১০৯তম মন্দিরটি প্রতিষ্ঠার সময় সেখানে লক্ষ সাধুর উপস্থিতি ঘটেছিল। তাঁদের পদধূলি রাজপরিবার একটি সোনার কলসিতে সংরক্ষণ করে রেখেছিল। রাজ্যপাল পুজো দেওয়ার পাশাপাশি মন্দির ঘুরে দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, নতুন বছর এ রাজ্যের প্রতিটি বাসিন্দার কাছে সুখ সমৃদ্ধি শান্তির হোক এই কামনা জানিয়েছি।