স্থায়ীভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারত সরকারের জলশক্তি, (আরডি এবং জিআর) মন্ত্রকের অধীনে গঙ্গা বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশন (জিএফসিসি) -এর কাছে কেন্দ্রীয় সহায়তা পাওয়ার জন্য ১২১২ কোটি টাকা ব্যয়ের একটি বিস্তারিত প্রকল্প প্রতিবেদন (ডিপিআর) জমা দিয়েছে। ২০১৪-২০২২ সময়কালে বিভিন্ন স্তরের মূল্যায়নের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর, ভারত সরকার ১২৩৮.৯৫ কোটি টাকার বিনিয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে ২০২২-এ। পরবর্তী কালে সেচ ও জলপথ বিভাগ ২০২২ সালের জুন মাসে কেন্দ্রীয় তহবিল প্রকল্প FMBAP (বন্যা ব্যবস্থাপনা ও সীমান্ত এলাকা কর্মসূচি) এর আওতায় অন্তর্ভুক্তির আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠায়। তবে, রাজ্য সরকারের গত ১১ বছর ধরে তদ্বির সত্ত্বেও, আজ পর্যন্ত ভারত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য কোনও আর্থিক সহায়তার অনুমোদন করেনি।
advertisement
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে, রাজ্য সরকার ২০১৮-২০২১ সালে প্রকল্প এলাকায় মোট ১১৫.৮০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৭টি নদী পুনঃখনন কাজ সম্পন্ন করে, যার মোট ব্যয় ৩৪১.৪৯ কোটি টাকা সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের বাজেট থেকে করা হয়। এছাড়াও, কেন্দ্রীয় সহায়তা প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা বিবে মুখ্যমন্ত্রী চনা করে, রাজ্যের মাননীয়া, ঘাটাল এবং আশেপাশের এলাকার হাজার হাজার বন্যার্তদের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে, প্রকল্পের অবশিষ্ট অংশগুলি নিজস্ব বাজেট থেকে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেন যার মোট ব্যয় বরাদ্দ ১৫০০ কোটি টাকা। এই প্রকল্প ২০২৫-২০২৬ সাল থেকে শুরু করে ০২ (দুই) বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের সময়সীমা স্থির করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মাঠে পাঁচটি স্লুইস নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে, যার বর্তমান অগ্রগতি প্রায় ৬০-৭০%। চন্দ্রেশ্বর খালের খনন কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে।
ঘাটাল পুরসভা এলাকায় দুটি পাম্প হাউসের কাজ শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে, কাজের ওয়ার্ক অর্ডার জারি করা হয়েছে। প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের শিলাবতী নদী, পুরাতন কাঁসাই, তমাল, পারং, বুড়ি গঙ্গা, সোলাতোপা, পুরাতন সোলাতোপা চ্যানেলের খননের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। প্রকল্পটি ২০২৭ সালের মার্চ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।রাজ্যের সেচ মন্ত্রী মানস ভুইয়া জানিয়েছেন, প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের ভিত্তিহীন দাবির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে সেচ ও জলপথ বিভাগ। আবারও উল্লেখ করা বাহুল্য যে, গত ১১ বছর ধরে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য ভারত সরকার এক পয়সাও ছাড় করেনি, যদিও বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ ও জলপথ বিভাগ আত্মবিশ্বাসী যে প্রকল্পের সম্পূর্ণ কাজ শেষ হওয়ার পর, ওই এলাকার মানুষ বন্যা ও জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তি পাবে।