রূপার (নাম পরিবর্তিত) জন্ম উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থানা এলাকায় এক দরিদ্র পরিবারে। দশ ভাইবোনের সংসার। অভাব অনটনের মধ্যেই জীবনের ১৩টা বছর কাটানো। শেষে বাবাকে সাহায্য করার জন্যে বেলেঘাটায় একটি চামড়ার গ্লাভসের কোম্পানিতে কাজ শুরু করেছিলেন রূপা। কিন্তু তাতেও হিতে বিপরীত হয়। কাজের টাকা দেওয়ার নাম করে এক রাতে তাঁকে নিষিদ্ধ পল্লিতে বিক্রি করে দেয় সেই সংস্থার মালিক।
advertisement
জীবনের অন্ধকার অধ্যায়ের কথা বলতে গিয়ে চোখের কোণ ভিজে যাচ্ছিল রূপার। বলেন, "এখন আমার বয়স ৫৪। ওই ঘটনার পরে হাত ঘুরে কখন যে ওড়িশা পৌঁছে গেলাম, এখন আর মনে করতে পারি না। আর ওখানেই ঘটল সেই ভয়াবহ ঘটনা। বেঁচে থাকতে ওই রাতের কথা ভোলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কী ভাবে যে বেঁচে গিয়েছিলাম, কে জানে?" রূপা জানান, সেই সময় ওড়িশার বালেশ্বর স্টেশনের কাছে একটি নির্জন জায়গায় পর পর ১২ জন ধর্ষণ করেন তাঁকে। সেই রাতে যে জীবনটুকু নিয়ে ফিরতে পেরেছিলেন তার জন্য ঈশ্বরকে প্রতিদিন ধন্যবাদ জানান।
জীবনযুদ্ধ পেরিয়ে আজ রূপা ইস্পাত কঠিন। তবে, চান, যে সমস্ত ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে তাঁকে যেতে হয়েছে, তেমনটা যেন আর কারও সঙ্গে না হয়। এদিন তিনি বলেন, "নারী হিসেবে জীবনে অনেক সহ্য করেছি। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। কিন্তু এখনও জীবনের মর্যাদা পাইনি। তাই চাই, নিষিদ্ধ পল্লির সন্তানেরা যাতে সঠিক পথ এগোক, জীবনে প্রতিষ্ঠিত হোক।"