গত ৮ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিল ফরাক্কা ব্যারেজ আবাসনের বাসিন্দা পাপাই দাস (১৮)। সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আর বাড়ি ফেরেনি সে। ফোনেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা।
অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনও খোঁজ না পাওয়ায় ১১ জানুয়ারি ফরাক্কা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেন পাপাইয়ের মা পূর্ণিমা দাস। সাতদিন নিখোঁজ থাকার পর সন্ধ্যায় ফরাক্কার নিশ্চিন্দ্রা নৌকা ঘাটের পাশে ফিডার ক্যানেলের ধার থেকে পুলিশ উদ্ধার করে ওই যুবকের মৃতদেহ। দেহের মধ্যে পোড়া দাগ ছিল।
advertisement
আরও পড়ুন: বিয়ে করতে লিঙ্গ বদল, প্রিয় বান্ধবীকেই চেন দিয়ে বেঁধে জীবন্ত পুড়িয়ে মারল যুবক!
মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা বাঁধ প্রকল্পের আবাসনের ৯ নম্বর ব্লকে পাপাইদের বাড়ি। পাপাই সহ তার চার বন্ধু অনিক কর্মকার, রৌশন জমাদার, আব্বাস সেখ ও শুভজিৎ মাজি- এই পাঁচজনেরই মোবাইল গেমে প্রচণ্ড আসক্তি ছিল। প্রতিদিন ফিডার ক্যানেলের ধারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা মোবাইলে গেম খেলত বলে প্রতিবেশীরা জানান।
এই তথ্য হাতে পেয়েই ফরাক্কা থানার পুলিশ বুধবার সকালে পাপাইয়ের বন্ধুদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পুলিশের চাপের সামনে শেষ পর্যন্ত ওই চার তরুণ পাপাইকে খুনের কথা স্বীকার করে৷ পুলিশের জেরাই তারা স্বীকার করে, অনিকের কাছ থেকে একটি ফ্রি ফায়ারের আইডি ২ হাজার টাকার বিনিময়ে কিনেছিল পাপাই। কিছুদিন পর অনিক আবার খেলার জন্য ওই ফ্রি আই ডি পাপাইয়ের কাছ থেকে নেয়। কিন্তু পরবর্তীতে পাপাই সেই ফ্রি আইডি চাইলে অনিক আর সেটি দেয়নি বলে অভিযোগ। এবং অনিক, রৌশন ও আব্বাসের সহযোগিতায় সেই ফ্রি আই ডি নিজেদের নামে করে নেয়। আর তা নিয়েই শুরু হয় পাপাইয়ের সঙ্গে চার বন্ধুর ঝামেলা।
এর পরেই তারা পাপাইকে খুন করে বলে অভিযোগ। দেহ যাতে শনাক্ত না করা যায়, তাই গাড়ি থেকে পেট্রোল বের করে দেহটি জ্বালানোর চেষ্টা করে তারা। দেহটি লোপাট করতে সেটি জঙ্গলের মধ্যে ফেলে আসে অভিযুক্তরা।
মৃত পাপাইয়ের মা পূর্ণিমা দাস ও বাবাকে বুধবার থানায় ডেকে এক প্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। মা পূর্ণিমা দাস বলেন, ওরা পাঁচ বন্ধু মোবাইল নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকত। সেই কারণে বাড়িতে অনেক বকাবকি করতাম। কিন্তু মোবাইলের জন্যই যে আমার ছেলেকে খুন করে দেবে, সেটা ভাবতেও পারিনি। পুলিশ আমাদের গোটা ঘটনাটা জানালে বুঝতে পারি ওই চারজন বন্ধু মিলেই আমার ছেলেকে নিষ্ঠুরভাবে খুন করেছে। আমি ওদের কঠোর শাস্তি চাই।