আরও পড়ুন- বিলকিস বানোর দোষীদের মুক্তির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হোক, চলছে সই সংগ্রহ অভিযান
এই শ্মশানে ডোমের দায়িত্বে রয়েছেন পুরুষরাও। তবে মৃতদেহ নিয়ে যারা আসেন তাঁরা চান টুম্পাই তাঁদের জন্য কাজ করুন। শ্মশানের আচার-অনুষ্ঠানের বিষয়ে টুম্পার জ্ঞান ও কাজের ধরন বেশ প্রশংসিত। শ্মশানযাত্রীদের কেউ কেউ মাঝে মাঝে কিছু অতিরিক্ত টাকা দিয়ে যান। সেটুকুই অতিরিক্ত পাওনা মাত্র। বারুইপুরের কল্যাণপুর পঞ্চায়েতের পুরন্দরপুর জোড়া মন্দিরের কাছে টুম্পা দাসের বাড়ি। তাঁর বাবা বাপি দাস পুরন্দরপুর শ্মশানেই ডোমের দায়িত্বে ছিলেন।
advertisement
টুম্পার বাবা বেশ কয়েক বছর আগে প্রয়াত, পরিবারের ভরণপোষণের জন্য শ্মশানে বাবার কাজের দায়িত্ব পড়ে টুম্পার উপরেই। ছোট বোন ও মায়ের সংসারে বড় মেয়ে টুম্পাই। পুরন্দরপুর শ্মশানটিতে কাঠের চুল্লি এবং বৈদ্যুতিক চুল্লি দুই’ই রয়েছে। বারুইপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৯ সালের মার্চ মাসে এই শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লির উদ্বোধন করেছিলেন৷ ২০১৫ সাল থেকে টুম্পা শ্মশানে কাঠের চিতার সমস্ত দায়িত্ব সামলেছেন৷ এক হাতে গ্লাভস আর অন্য হাতে কাঠ নিয়ে কাজে নেমে পড়েন টুম্পা। টুম্পার কথায়, “মৃতদেহ শ্মশানে এলে নাম নথিভুক্ত করার কাজ শুরু হয়। তারপর লাশ চুল্লিতে ঢোকানো থেকে শুরু করে মেশিন চালানো, হাড়গোড় বের করে আনা সবই আমাকে করতে হয়। সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত একটানা ডিউটি। বিশ্রাম নেই।”
আরও পড়ুন- ‘নেতাজির চিতাভস্ম ভারতের মাটিতে ফিরে আসুক’, আর্জি সুভাষকন্যা অনিতা বসু পাফের
শুধু বারুইপুরের কল্যাণপুর পঞ্চায়েত এলাকার মানুষই নয়, আশেপাশের পঞ্চায়েত এলাকার মানুষও এই শ্মশানে আসেন। এমনকি বিষ্ণুপুর থেকেও মানুষ সৎকারের জন্য এখানে দেহ নিয়ে আসেন। ফলে শ্মশানে ভিড় বাড়ে। টুম্পা বলেন, “শুরুতে ভয় পেয়েছিলাম। সারাদিন ধরে একের পর এক মৃতদেহ চুল্লিতে ঢোকানো দেখে। শ্মশানযাত্রীদের প্রতি ভালবাসা এবং কাজের তাগিদ আমার মনকে শক্ত করেছে। পরিবারের পেটে খাবারের ব্যবস্থা করাই এই কাজের প্রতি আমার টান।” টুম্পা বলেন, “আমি কল্যাণপুর পঞ্চায়েত থেকে মাসিক ৩,৫০০ টাকা বেতন পাই। আজকের দিনে ৩ জনের সংসার এই টাকায় চালানো যায় না।”