মূলত নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মদের চাহিদা বিপুল পরিমাণে থাকে। বিশেষ করে দিঘা, মান্দারমণির মত পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে রেকর্ড পরিমাণ মদ বিক্রি হয়। সেই জায়গায় বহু মদ বিক্রেতা অবৈধভাবে মদ চড়া দামে বিক্রি করে। শেষ বছর এ নিয়ে বেশকিছু অভিযোগ জমা পড়েছিল। তাই চলতি বছর যাতে কোনও ধরনের অভিযোগ উঠে না আসে সেজন্য আগেভাগেই সতর্ক আবগারি দফতর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট লাইসেন্স প্রাপ্ত মদের দোকানের সংখ্যা ২৯১টি। যার মধ্যে অধিকাংশ দোকানেই ই-পশ সিস্টেম চালু রয়েছে। সেই সিস্টেমের মাধ্যমে বারকোড স্ক্যান করে মদ বিক্রি করা হয়। আর সেই সমস্ত তথ্য সরাসরি আবগারি দফতরের কাছে পৌঁছে যায়। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে আবগারি দপ্তরের নজর এড়িয়ে মদ বিক্রি করা হয়।
advertisement
চলতি বছর এপ্রিল মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় লাগাতার অভিযান চালিয়েছে আবগারি বিভাগ। তাতে ১৬৮জন গ্রেফতারের পাশাপাশি আবগারি সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগে মোট ২৬৫৫টি মামলা দায়ের করেছে আবগারি বিভাগ। বিপুল পরিমাণ অবৈধ মদও বাজেয়াপ্ত করেছে আবগারি দফতর। রাম বা ভদকা জাতীয় মদ উদ্ধার হয়েছে প্রায় ২১৩৭৫ লিটার। বিয়ার উদ্ধার হয়েছে ২৩০৯ লিটার। ওভারপ্রুফ স্পিরিট উদ্ধার হয়েছে ১৪০০ লিটার। এছাড়াও ২৪ টি টোটো ও সাইকেল বাজেয়াপ্ত করেছে আবগারি বিভাগ। জেলায় প্রত্যেক দিন গড়ে চার কোটি টাকার বেশি মদ বিক্রি হয়। চলতি বছর পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট ১৯৬৪ কোটি টাকার মদ বিক্রির টার্গেট রয়েছে। অক্টোবর মাস পর্যন্ত ১০৯৫ কোটি টাকার মদ বিক্রি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
বিপুল পরিমাণ এই মদ বিক্রি থেকে আবগারি বিভাগের কাছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয়। এমন পরিস্থিতিতে রাজস্ব ফাঁকি দিতে বহুক্ষেত্রে অবৈধভাবে মদ বিক্রি করা হয়। তা রুখতেই বর্তমানে আবগারি বিভাগের এই অভিযান। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আবগারি বিভাগের সুপার মণীশ শর্মা বলেন, “জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে মূলত অবৈধভাবে মদ বিক্রির প্রবণতা রয়েছে। তাই ছড়া দামে যাতে অবৈধভাবে মদ বিক্রি না হয় সেই জন্য এই অভিযান। ইতিমধ্যে ১৬৮ জন গ্রেফতার হয়েছে অবৈধ মদ বিক্রির অভিযোগ। আগামী দিনেও এই অভিযান চলবে।” জেলা আবগারি দফতর সূত্রে আরও জানা যায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা এবার মদ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা পরিপূর্ণ করতে পারবে। সামনে শীতকালীন পর্যটন মরশুম সহ ২৫ ডিসেম্বর, ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারির উৎসব রয়েছে। ফলে এই অর্থবছরে মদ বিক্রির যা লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে তা পূরণ করা সম্ভব বলে মনে করছেন আবগারি দফতর।
