মনির খানের বাবা মৈমুদ খান পেশায় গরুর গাড়ি চালাতেন। ছোট মনির প্রায়ই বাবার সঙ্গে গরুর গাড়িতে বসে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে যেতেন। কখনও আবার গরুর গাড়ির পিছনে দৌড়াতেন। সেই সময়েই ছেলের হাতের তাল ও ছন্দবোধ লক্ষ্য করেন বাবা। বুঝতে পারেন, ছেলের মধ্যে লুকিয়ে আছে বিশেষ প্রতিভা। সালটা ছিল ১৯৬৩। তখন মনিরের বয়স মাত্র ১১ বছর। ছেলের আগ্রহকে সম্মান জানিয়ে তাকে একটি ঢোল কিনে দেন বাবা। সেই ঢোলই বদলে দেয় মনির খানের জীবন।
advertisement
আরও পড়ুন: ইটের বদলে পাথর, পুরুলিয়ার জয়চণ্ডী পাহাড়ের পাদদেশে তৈরি হচ্ছে অভিনব বিল্ডিং! নজর কাড়ছে সবার
এরপর গ্রামের কাওয়ালি গানের দলে হাতে খড়ির জন্য যোগ দেন পূর্ব মেদিনীপুরের মনির খান। সেখান থেকেই শুরু হয় তার নিয়মিত ঢোল বাজান। দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি ওই কাওয়ালি দলের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে অনুষ্ঠান করতেন। ধীরে ধীরে তার নাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এরপর তার জীবনে আসে বড় সুযোগ। কলকাতার বিখ্যাত ওস্তাদ লাল খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তার। ওস্তাদ লাল খানের কাছে ঢোলের নানা তাল ও কৌশল শেখেন মনির।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তারপর থেকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি তাকে। জেলা ছাড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঢোলের জাদুতে মানুষকে মুগ্ধ করেছেন তিনি। এমনকি রাজ্যের বাইরে রাজস্থানের কাওয়ালি দলেও ঢোল বাজিয়েছেন। দীর্ঘ ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে ঢোলই তাকে এনে দিয়েছে খ্যাতি ও সম্মান। বর্তমানে প্রায় ২০০ জন ছেলে তার কাছে ঢোল শিখেছে। তারা আজ প্রতিষ্ঠিত ঢোল বাদক। মনির খান আজ এলাকার তরুণদের কাছে এক বড় অনুপ্রেরণা। ৭৩ বছর বয়সেও তিনি ঢোল ছাড়তে পারেন না। শরীর মাঝে মাঝে হার মেনে যায়। কিন্তু মনির খানের মন কখনও হার মানে না। এই ঢোলই যেন তার প্রাণ।





