যদিও আজ সেই চিত্র আগের মতো নেই, তবুও স্থানীয় মানুষের টানে, আবেগে আর বিশ্বাসে ঐতিহ্যের সেই রঙ আজও অটুট। এখনও কিছু মানুষ গাছ নিয়ে বসেন মেলায়, আর বহু ভক্ত সেই রেওয়াজ মেনে গাছ কিনে বাড়ি ফেরেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী প্রসেনজিৎ সূত্রধর বলেন, আগের মত সেভাবে গাছ ব্যবসায়ীরা আসেন না। আমরা কিছু লোকাল ব্যবসায়ী এখনও ঐতিহ্য বজায় রেখেছি। সব গাছই এখানে পাওয়া যায়, এটা গাছ পুজো নামেই পরিচিত।
advertisement
এই পুজো নিয়ে রয়েছে এক পুরনো কাহিনি। কথিত, পাশের চাঁদের বিলে মনসাদেবীর কোপে চাঁদ সওদাগরের নৌকা ডুবে গিয়েছিল। সেই ঘটনার পরই চাঁদ সওদাগর এই ব্রহ্মাণী তলায় মনসাদেবীর পূজা দেন। আর সেই থেকেই শুরু হয় শতাব্দীপ্রাচীন এই পুজো, যা আজও হাজারও মানুষের বিশ্বাসে অটুট।
এই পুজোকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর বসে গ্রামীণ মেলা। ৭ দিন ধরে চলে আনুষ্ঠানিক মেলা, তবে গাছ ও কাঠের ব্যবসা চলে প্রায় এক মাস জুড়ে। মেলা মানেই মানুষের মিলনক্ষেত্র, কথোপকথন, আনন্দ, ভক্তি আর ঐতিহ্যের এক সুন্দর মেলবন্ধন। পুজো কমিটির সম্পাদক অরিন্দম ঘোষ বলেন, ‘‘বহু মানুষ এখানে ভিড় জমান, অন্যান্য জেলা থেকেও অনেকেই পুজো দিতে আসেন।’’
রবিবার মেলায় হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, এলাকার বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক, আইসি বিশ্ববন্ধু চট্টরাজ, মেলা কমিটির সভাপতি তথা প্রধান মিলনান্তি দেবনাথ ও সম্পাদক অরিন্দম ঘোষ-সহ আরও অনেকে। সকলের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে উঠেছিল ব্রহ্মাণী মাতার মেলা প্রাঙ্গণ। বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও, এই পুজো আর মেলাকে ঘিরে মানুষের ভক্তি, আবেগ ও আনন্দ কিন্তু আজও একই রকম রঙিন।