TRENDING:

মালিয়াড়া রাজবাড়িতে অষ্টধাতুর মূর্তিতেই হয় পুজোর আয়োজন

Last Updated:

বেলজিয়াম কাঁচের ভাঙা ঝাড়বাতিতে অতীতের ঝলক। খিলানে তোরণে সময়ের ছোপ।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#বাঁকুড়া: বেলজিয়াম কাঁচের ভাঙা ঝাড়বাতিতে অতীতের ঝলক। খিলানে তোরণে সময়ের ছোপ। রাজবাড়ি জুড়ে সূক্ষ্ম কারুকাজে আজ কালের প্রলেপ। বাঁকুড়ার মালিয়াড়ার রাজবাড়ি জৌলুস হারিয়েছে। সময়ের নিয়মেই। তবু প্রতি শরতে নাটমন্দিরে শোনা যায় ঘণ্টাধ্বনি।
advertisement

সন্ধ্যারতির আবছা আলোয় জেগে ওঠে পাঁচশো বছরের ইতিহাস। ধুপ-ধূনোর গন্ধে ভেসে আসে স্মৃতি। ৫০০ বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা খিলানে ঝুলতে থাকে ভাঙা ঝাড়বাতির সবজেটে আলো। মালিয়াড়া রাজবাড়ির আলো-অন্ধকার পেরিয়ে আসা নাটমন্দিরে বেজে ওঠে মাদল। বলির বাজনা। অষ্টমীর রাতে। সন্ধি মূহুর্তে দেগে ওঠে বন্দুক। আজো সমস্ত নিয়মনীতি মেনেই দুর্গাপুজো হয় মালিয়াড়া রাজবাড়িতে।

advertisement

দিল্লির মসনদে তখন মোঘল সম্রাট আকবর। তাঁর কাছ থেকে জায়গীর পান কাম্বকুব্জ ব্রাক্ষ্মণ দেওধর চন্দ্রধুর্য বা দেওঘর চন্দ্রধুরিয়া। উত্তর প্রদেশের কনৌজ থেকে বাংলায় এসে দামোদরের দক্ষিণে স্থাপন করে রাজত্ব। সেখানে তখন ঘন বন। বন্যপ্রাণী আর ডাকাতদের হারিয়ে নিজের অধিকার কায়েম করেন দেওধর। রাজত্ব করতে বেছে নেন বাঁকুড়ার মালিয়াড়া গ্রামকে। উত্তর দামোদর থেকে দক্ষিণের শালী নদী পর্যন্ত বিস্তৃত সেই রাজত্ব। আদায় করা রাজস্বে উপচে পড়ত রাজকোষ।

advertisement

শুরুতে ছিল তিনদিনের পুজো। তারপর রাজত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিপদ থেকে পুজো শুরু। রাজবাড়ির ভিতরে বিশাল ঠাকুরদালানে জমজমাট দুর্গা আরাধনা। রাজার পুজো বলে কথা। জামকজমকই আলাদা। কুলডিহা, জালানপুর, পিংরুই, মাধবপুরের মত বাহান্নটি মৌজা থেকে আসত প্রজারা। ঢালাও খাওয়া দাওয়া, বাইজি নাচ, যাত্রার আসরে রমরম করত রাজবাড়ি।

বিশাল রাজবাড়ির প্রতিটি কোনায় আজও জমিদারির নীল রক্তের ঝলক। সেই তেজ নেই। কিন্তু রেশটা রয়েই গেছে। আভিজাত্যের সঙ্গে এখন নব্য রাজার প্রতিপত্তি।

advertisement

বাইজি নাচ ছিল রাজবাড়ির বিশেষ আকর্ষণ। বেনারস, লখনৌ, কলকাতা থেকে আসতেন নামী বাইজিরা। ঠাকুরদালান জমে উঠত যাত্রা, রামলীলার আসরে। রাজন্য প্রথা ও মধ্যসত্ত্ব প্রথা বন্ধের পর টান পড়ে রাজকোষে। ধীরে ধীরে কমে জৌলুস।

আজ রাজাও নেই । রাজত্বও শেষ। তবু পুজো বন্ধ করেননি বংশধররা। বাড়ির অষ্টধাতুর মূর্তিতেই হয় পুজোর আয়োজন। জৌলুসহীন পুজোয় অবশ্য নিয়ম নিষ্ঠার অভাব নেই। সপ্তমী থেকে নবমী। একটানা যজ্ঞের আয়োজন। নবমীতে বিশেষ হোম। আগে তোপ ধ্বনিতে পুজো শুরু হত। এখন বন্দুক দেগে শুরু হয় সন্ধিপুজো। তারপরই পুজো শুরু হয় পুরো গ্রামে ।

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
বাজারে ব্যাপক চাহিদা, তবুও মাথায় হাত! পান চাষ করে কেন সমস্যায় চাষিরা?
আরও দেখুন

বিশাল আকারের বেলজিয়াম কাঁচের ঝাড়বাতি, দুর্গা মন্দির, নাট মন্দির। সবই আছে। আজও। অতীত বৈভবের স্মৃতি হয়ে। আগামী প্রজন্মের ইতিহাসের পথিক হয়ে।

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
মালিয়াড়া রাজবাড়িতে অষ্টধাতুর মূর্তিতেই হয় পুজোর আয়োজন