পায়ে পায়ে প্যান্ডেল ঘোরা...অনেকেরই পছন্দ...কেউ চায় ভিড়ে একলা হতে... কারও পছন্দ নিরিবিলি। শহুরে কোলাহল থেকে দূরে। পাহাড়ে বা জঙ্গলে। যেখানে মানুষর ভিড় নেই। আছে মন ভালো করা সবুজের ভিড় ...আর আছে দুর্গা।
বাঁকুড়া শহর থেকে মাত্র আঠার কিলোমিটার । ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কপথেই পৌঁছনো যায় নিঃঝুম কোড়ো পাহাড়ে। নাম না জানা লতা-পাতা-ঘাসে ঢাকা ছোট্ট সবুজ পাহাড়। উচ্চতা চারশো কি পাঁচশো ফুট। রূপোলি ফিতের মত পাহাড়ের একপাশ দিয়ে বয়ে গেছে শালি নদী। লাল মোরাম বিছোনো পাকদন্ডি বেয়ে পাহাড়ের মাঝামাঝি ছিমছিম আশ্রম।
advertisement
গাড়ির পথ শেষ এখানেই। এরপর বড় বড় পাথরের চাঁই ডিঙিয়ে একবারে পাহাড়ের চুড়ায়। পাহাড়ি অষ্টভূজা পার্বতীর বসত এখানে। মন্দির আছে, অথচ মিথ থাকবে না... এ আবার হয় নাকি?
জনশ্রুতি, প্রায় নব্বই বছর আগে এক সাধু হেঁটে হিমালয় যাওয়ার পথে জনহীন এই পাহাড়ের নিচে বিশ্রাম নেন। তাঁর উদ্যোগেই তৈরি হয়েছিল মন্দির। কাশী থেকে নিয়ে আসা হয় অষ্টভূজার পার্বতী মূর্তি।
যখন ঘর ছেড়েছিলেন, কাউকে ফেলে এসেছিলেন কী? মেয়ে কিংবা বোনকে। তাই কী ধ্যানে দেখা দিয়েছিল বালিকাবেশী পার্বতী।
বছরভর আসেন ভক্তরা। ভিড়ে নয়। নিস্তব্ধতায় সরব প্রকৃতি। গাছেদের ফিসফাস বড় স্পষ্ট । এখানে ঢাক বাজে মনে মনে। সপ্তমী থেকে দশমী। বৈষ্ণব মতে পার্বতীর আড়ম্বরহীন পুজো। ভোগের আয়োজন সামান্যই। খিচুড়ি আর ছোলা । সঙ্গে হলুদ কড়কড়ে মুড়ি।
সন্ধে নামে । শালি নদীর উপর গাংদুয়া জলাধারের জলে রঙের খেলা। চারদিকের জঙ্গল তখন আরও নিঃঝুম। ঘরে ফেরা পাখিদের কলতান, পোকা, ঝিঝির কোরাসে পাহাড়ি পার্বতী আরও রহস্যময়ী। থাকার ব্যবস্থা আছে মন্দির লাগোয়া যাত্রীনিবাসে।
পুজো আসলে উৎসব। জমিয়ে ছুটি উপভোগ। পাহাড়ি দুর্গার সান্নিধ্যে সে ছুটি নিরিবিলিতে কাটলে মন্দ কী ?
নিউজ 18 বাংলা
