#বর্ধমান: লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন পূর্বস্থলীর নতুন গ্রামের কাষ্ঠ শিল্পীরা। কাঠের পুতুল তৈরি করেই সারা বছরের সংসার চলে তাঁদের। পুজোর আগে বাড়তি কাজ মেলে। উপার্জনও হয় একটু বেশি। কিন্তু এবার করোনার আবহে অনেক পুজো কমিটি বাজেট কাটছাঁট করেছে। তাই মন্ডপ সাজাতে কাঠের পুতুলের সেভাবে চাহিদা থাকবে না বলেই মনে করছেন নতুনগ্রামের শিল্পীরা। করোনার জেরে বন্ধ বিভিন্ন মেলাও। ফলে কাঠের পুতুল থেকে শুরু করে নানান উপকরণ ঘরবন্দি রয়ে গিয়েছে।
advertisement
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে জেরবার গোটা বিশ্ব। কাজ হারিয়েছেন অনেকেই। দিশেহারা পূর্বস্থলীর নতুন গ্রামের কাষ্ঠ শিল্পীরাও। কাজ নেই তাঁদের হাতে। প্রতি বছরই দুর্গাপুজোর মন্ডপ সাজাতে এই সময় মোটা টাকার বরাত আসে। কলকাতা, দুই চব্বিশ পরগনা, বর্ধমান, দুর্গাপুর, আসানসোল থেকে মোটা টাকার কাজের বরাত আসে। আসেন পুজো কমিটির লোকজন। আসেন থিম মেকাররা। কাজ বুঝিয়ে অগ্রিম দিয়ে যান। কোমর বেঁধে কাজে লেগে পড়েন নতুন গ্রামের শিল্পীরা।
কিন্তু এ বছর করোনা আবহে শিল্পীদের স্বাভাবিক জীবনে ছেদ পড়েছে। পুজো কমিটির সদস্যদের দেখা নেই। ফোন করলে জানিয়েছে এবার বাজেট অনেক কম হবে। কাঠের পুতুল লাগবে না। তাই এ বছর কলকাতা বা রাজ্যের অন্য অংশে পুজো প্যান্ডেলগুলিতে নতুন গ্রামের কাঠের পুতুল পাড়ি দেবে না বলেই মনে করছেন শিল্পীরা। তাঁরা বলছেন, অনেক পুজো কমিটির সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেই সুবাদে অনেক পুজো কমিটি ধার বাকিও রেখে দেয়। এই সময় সেই টাকা শোধ করে নতুন বরাত দেন তাঁরা। অনেক পুজো কমিটির কাছেই এক দেড় লাখ টাকা করে পাওনা রয়েছে। এই দুর্দিনে সে টাকাও মিলছে না।
করোনার সংক্রমণের আশঙ্কায় লকডাউনেরে জেরে মেলাগুলিও বন্ধ। অন্যান্য সময় হস্তশিল্প মেলা সহ বিভিন্ন মেলায় নতুনগ্রামের কাঠের পুতুলের ভালো চাহিদা থাকে। অনেকেই ঘর সাজাতে সেসব কিনে নিয়ে যান। এবার সেই বিক্রিবাটাও বন্ধ। যার ফলে ঘরেই ধুলো জমছে নতুন গ্রামের শিল্পীদের হাতে তৈরি কাঠের বিভিন্ন উপকরণে। কবে উঠবে লকডাউন, কবে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারা যাবে তা ভেবেই দিন কাটাচ্ছেন নতুন গ্রামের শিল্পীরা।