পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সামুদ্রিক মাছ উৎপাদনের অন্যতম ক্ষেত্র। একদিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত, অন্যদিকে এই জেলার মধ্যে দিয়ে শিরা-উপশিরার মত বয়ে গিয়েছে একাধিক খাল-বিল, নদ-নদী। ফলে এই জেলার বহু মানুষ নদী ও সমুদ্রে মাছ শিকার করেই জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু দিনের পর দিন নদী ও সমুদ্রে মাছের জোগান নেই। ফলে পেটে ভাত নেই মৎস্যজীবীদের। প্রতিবছর মাছ শিকারের মরশুমে দেখা যায়, অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের যোগান কমছে। ফলে মরশুমে এখন জাল ফেলে সেই রোজগার আর নেই। তার উপর রয়েছে ‘ব্যান পিরিয়ড’! এই ৬১ দিন নদী বা সমুদ্রে জাল ফেলা যাবে না। ফলে বছরের পর বছর দুশ্চিন্তা বাড়ছে জেলার ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের।
advertisement
নদী বা সমুদ্রের সামুদ্রিক মাছের জোগান কমার বিষয়ে দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শাখার সম্পাদক দেবাশিস শ্যামল জানিয়েছেন, ‘মূলত তিনটি কারণে দিন-দিন মাছের জোগান কমছে– এক অনিয়ন্ত্রিত ফিশিং বা ট্রলার ফিশিং। দুই– নদী-সমুদ্রে দূষণের পরিমাণ বাড়ছে। তৃতীয়ত উপকূলবর্তী অঞ্চলে একাধিক প্রকল্পের কারণে জীববৈচিত্র হারাচ্ছে নদ-নদী ও সমুদ্র। আর তাতেই সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন অনেকটাই কমেছে। শেষ কয়েক বছরে ষাট শতাংশ মাছ উৎপাদন কমে গিয়েছে। সমস্যায় পড়েছে প্রান্তিক মৎস্যজীবীরা। আবার ‘ব্যান পিরিয়ড’-এ সমুদ্রসাথী প্রকল্পের ভাতা পাওয়া যাচ্ছে না। তাতে আরও সমস্যা নেমে এসেছে ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী পরিবারে।’
মৎস্যজীবী ফোরামের সূত্রে জানা যায়, শেষ কয়েক বছরে জীবিকা হারিয়েছে এক লক্ষের বেশি ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী। ‘ব্যান পিরিয়ড’-এ সমুদ্র সাথী প্রকল্পের ভাতার টাকা পাওয়া গেলে সমস্যা খানিকটা মিটত বলে মনে করছেন ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীরা। দ্রুত মৎস্যজীবীদের এই ভাতা চালু হোক, ইতিমধ্যেই মৎস্যজীবীদের এই দাবি জানানো হয়েছে মৎস্য দফতরে। এই দাবিতে কতটা সাড়া দেবে মৎস্য দফতর, সেই দিকেই তাকিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রায় দেড় লক্ষেরও বেশি প্রান্তিক মৎস্যজীবী।
সৈকত শী