মালদহ জেলায় ইন্দ্রদেবের পুজো হলেও এমন প্রতিষ্ঠিত মূর্তি তেমন দেখা যায় না। এই মন্দিরে দেবরাজ ইন্দ্রের পুজো দিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে। পুজোর পর সপ্তাহব্যাপী চলে মিলন মেলার উৎসব। দেবরাজ ইন্দ্রের বাহন ঐরাবত। ধনরাজ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত মন্দিরে ঐরাবতের পিঠে বসে রয়েছেন দেবরাজ ইন্দ্র।
দেবরাজ ইন্দ্রের মাথায় রয়েছে ছাতা। দেবতাদের রাজা ইন্দ্র । তাই রাজ দরবারের আদলে মন্দির তৈরি করা হয়েছিল। এই মন্দিরে দেবরাজ ইন্দ্রের দুই পাশে দুইজন দ্বারপাল বা দ্বাররক্ষী রয়েছেন। মন্দির থেকে কিছুটা দূরে সামনেই রয়েছে শিবলিঙ্গ। স্থানীয় বাসিন্দারাও বলছেন, দেবরাজের এমন মুর্তি পুজো মালদহ জেলায় আর কোথাও দেখা যায় না। জেলার একমাত্র ধনরাজ গ্রামেই বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ঘটা করে পূজিত হয়ে আসছেন দেবরাজ। মালদা জেলার মানিকচক ব্লক গঙ্গা অববাহিকায় অবস্থিত। গঙ্গা ও ফুলহার নদীর একাধিক শাখানদীর খাঁড়ি রয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে।
advertisement
আরও পড়ুন : চার দেওয়ালের স্কুলবাড়ি নয়, রেলগাড়িতে বসেই পড়াশোনা করবে অসংখ্য ‘তোত্তো চান’
স্থানীয়দের মধ্যে কথিত, ধনরাজ গ্রামের পাশ দিয়ে এক সময় বয়ে গিয়েছিল গঙ্গা নদীর একটি খাঁড়ি। ধনরাজ গ্রামে মূলত মৎস্যজীবীদের বসবাস। কথিত, কোনও এক বছর ব্যাপক খরা দেখা দেয়। গঙ্গার খাঁড়িগুলির জল শুকিয়ে গিয়েছিল। বৈশাখ মাসে খাঁড়ির জল শুকিয়ে যাওয়ায় মৎস্যজীবীরা চরম সমস্যায় পড়েন জীবিকা নির্বাহ করতে। খাঁড়িতে জল নিয়ে আসার জন্য বৃষ্টির প্রয়োজন ছিল। তাই মৎস্যজীবীরা গ্রামের মধ্যে ঘটা করে ইন্দ্র দেবতার পূজো দিয়েছিলেন। তারই পর বৃষ্টিপাত হয়। জলে ভরে গিয়েছিল গঙ্গার খাঁড়িগুলি। আবার সেই জলে মাছ শিকার করে নিজেদের জীবিকা শুরু করেছিলেন মৎস্যজীবীরা।
আরও পড়ুন : দীর্ঘ দিন অতিরিক্ত পাউডারের ব্যবহার কি ক্যানসারের আশঙ্কা ডেকে আনে?
আরও পড়ুন : দীর্ঘ দিন অতিরিক্ত পাউডারের ব্যবহার কি ক্যানসারের আশঙ্কা ডেকে আনে?
সেই থেকেই প্রতিবছর গ্রামে বৈশাখ মাসের ২ তারিখ ঘটা করে ইন্দ্রদেবের পুজো হয়ে আসছে। তবে এই পুজোর সূচনা ঠিক কবে হয়েছিল তা অজানা এলাকার বাসিন্দাদের কাছে। প্রথমদিকে কাঁচা দেওয়ালের মন্দির ছিল সেখানে। স্থানীয়দের কথায় বা মন্দিরের গায়ে দেওয়াল লিখনের পরিষ্কার বোঝা যায় ১২০০ বঙ্গাব্দে তৈরি হয়েছিল মন্দিরটি। তবে পুজো আরও প্রাচীন, এমনটাই দাবি এলাকার বাসিন্দাদের।