বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা সর্বমঙ্গলা। রাঢ় বঙ্গে অবস্থান, তাই তাঁর আর এক নাম রাঢ়েশ্বরী। বর্ধমানের মহারাজ এই অষ্টদশভূজা পাথরের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময় থেকেই নিত্যপুজো হয় মন্দিরে। প্রতিদিন মাকে অন্নভোগ নিবেদন করা হয়। বর্ধমানের বাসিন্দারা যে কোনও শুভ কাজের আগে মা সর্বমঙ্গলার মন্দিরে পুজো দিয়ে আশীর্বাদ নেন। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন ভোর থেকেই মন্দিরে ভিড় করেছিলেন ভক্তরা। এরপর বেলা যত বেড়েছে ততই বেড়েছে পুণ্যার্থীদের ভিড়। সকলেই পুজোর ডালি হাতে নিয়ে লাইনে অপেক্ষা করেছেন।
advertisement
পুণ্যার্থীদের মধ্যে ছিলেন ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশ। তাঁরা চিরাচরিত রীতি মেনে এদিন সর্বমঙ্গলা মন্দিরে এসে হালখাতা পুজো করান। লাল খাতার ওপর সিঁদুর দিয়ে আঁকা হয় স্বস্তিক চিহ্ন। সিঁদুর গুলে লাগিয়ে দেওয়া হয় এক টাকার কয়েন। আনা হয় লক্ষ্মী গনেশের মূর্তি। পুজো করিয়ে সেই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে।এই রীতিই রাজ আমল থেকে চলে আসছে। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পুজো পর্ব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বাঁশের ব্যারিকেড করা হয়। ছিল পর্যাপ্ত পুলিশি বন্দোবস্ত। ছিল ফাস্ট এডের ব্যবস্থা ।
১৭০২ সালে স্বপ্নাদেশ পেয়ে চুনুরিদের কাছে থাকা বাঁকা নদের পার থেকে উদ্ধার করে দেবী সর্বমঙ্গলাকে বর্ধমানের মহারাজ কীর্তিচাঁদ রাজবাড়ির মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। তখন থেকেই বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা সর্বমঙ্গলা। মন্দিরের প্রবেশ পথে তিনটি স্তরে পোড়া মাটির মূর্তি রয়েছে। মূল মন্দিরের সামনে রয়েছে নাট মন্দির। দক্ষিণ দিকের প্রবেশ পথ দিয়ে ঢুকলে দেখা যায় দু-ধারে দুটো শিব মন্দির।