তাঁরা রাতদিন এক করে হাজার হাজার ঝাড়ু তৈরি করে চলেছেন। দুর্গাপুর স্টেশন বাজার এলাকায় রয়েছে এমনই ৫টি ঝাড়ু তৈরির কারখানা। ঝাড়ুর এক পাইকারি ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুলঝাড়ু তৈরির প্রধান কাঁচামাল আসছে সূদুর নেপাল থেকে। নেপালের পাহাড়ি উলু ফুল ঘাসের শুকনো ফুল দিয়েই তৈরি করা হয় ফুলঝাড়ু। পাশাপাশি এই রাজ্যের সমুদ্রকূল এলাকা থেকে আসছে নারকেল পাতার শুকনো কাঠি। ওই কাঠি দিয়ে তৈরি হচ্ছে নারকেল ঝাঁটা।
advertisement
কোনও মেশিনের সাহায্যে নয় কারিগরেরা সম্পূর্ণ নিজের হাতেই ঝাড়ু তৈরি করেন। ধনতেরাসের আগে এক একজন কর্মী প্রতিদিন প্রায় এক হাজারের অধিক ঝাড়ু তৈরি করেন। কারিগরেরা নিজেদের নিপুণ কৌশলে ও দক্ষতায় অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ঝাড়ু তৈরি করে চলেছেন অনবরত। ঝাড়ু কারখানার একজন মালিক হালিম খান জানান, তাঁর কারখানায় সারাবছর কম করে ৫ জন কারিগর প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ ঝাড়ু তৈরি করেন৷ কিন্তু ধনতেরাসের কয়েক মাস আগে থেকেই এই কর্মযজ্ঞ তিন চারগুণ বৃদ্ধি পায়। গত প্রায় ৫ বছর ধরে ঝাড়ুর এই বাজার তৈরি হয়েছে শহরে।
আরও পড়ুনঃ শূকর মারার ফাঁদে পড়ে ছটফটানি! ঝলসে গেল সর্বাঙ্গ…! হাওড়ায় বৃদ্ধের নির্মম পরিণতি
ধনতেরাসের আগে ঝাড়ু কেনার এই রীতি রয়েছে বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ বিভিন্ন রাজ্যে। যা আগে পশ্চিমবঙ্গে ছিল না। তবে এখন বাংলায় হিন্দিভাষীদের পাশাপাশি বাঙালিরাও এই রীতি মেনে চলেছেন। তাই প্রতিবছর ঝাড়ুর চাহিদা বেড়েই চলেছে। উল্লেখ্য, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় কর্মসূত্রে বহু অবাঙালির বাস। ধনতেরাস উৎসব পালন করতে ওই দিন অবাঙালিরা সোনা ও রুপোর গয়নার দোকানে ভিড় করেন। সেই সঙ্গে থালা-বাসন-সহ বিভিন্ন ধাতব সামগ্রীও কিনতে দেখা যায় তাঁদের।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
পাশাপাশি কেনেন ঝাড়ু-ঝাঁটাও। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে বাঙালিরাও সমান তালে এই উৎসবে মেতে উঠছেন। ফলে বাজারে স্বাভাবিকভাবেই ঝাড়ুর চাহিদা রেকর্ড হারে বেড়ে ওঠে এই সময়। সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েক বছর আগে একাধিক ‘শাস্ত্রবিদ’ ও ‘জ্যোতিষী’ এমন নিদান দিতেই বাজারে ঝাড়ু কেনার আগ্রহ বেড়েই চলেছে। তাই এখন নাওয়া খাওয়া ভুলে কাজে লেগেছেন ঝাড়ু তৈরির কারিগরেরা।