এখন আর হাটে-বাজারে আগের মতো মাটির হাঁড়ির দেখা মেলে না। চাকা থেমে যাচ্ছে কুমোরপাড়ায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর, ঘাটাল, চন্দ্রকোনা, ডেবরা–সহ জেলার বিভিন্ন কুমোরপাড়ায় এখন নিস্তব্ধতা। একসময় ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চাকা ঘুরত, আগুন জ্বলত চুল্লিতে। হাঁড়ি পোড়ানোর সেই দৃশ্য এখন বিরল। অনেক কারিগর দিনের পর দিন কাজ পাচ্ছেন না, বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। কেউ ভ্যান চালাচ্ছেন, কেউ দিনমজুরের কাজ করছেন।
advertisement
আরও পড়ুন : মাঠ ঘিরে প্রাচীর, তোরণ, আলো -সবই তৈরি! কিন্তু এক দাবিতেই থমকে গেল স্টেডিয়াম প্রকল্প
স্থানীয় এক কুমোর কারিগর আবেগভরা কণ্ঠে বললেন, “আগে আমাদের হাঁড়ি না কিনে বাড়ি ফিরত না কেউ। এখন লোকেরা প্লাস্টিক আর স্টিলের হাঁড়ি নিয়েই খুশি। হাতে কাজ আছে, কিন্তু তার দাম নেই। হাঁড়ি বানাতে যত খরচ হয়, ততটাও ওঠে না বিক্রিতে।” আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারাচ্ছে ঐতিহ্য। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, পরিবর্তিত সমাজ ও প্রযুক্তি মাটির হাঁড়ির ব্যবহার প্রায় বিলুপ্ত করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন : ‘এক পা দূরে ছিল মৃত্যু’, অবিশ্বাস্যভাবে উদ্ধার হল বিরল প্রজাতির প্রাণী
এখন মানুষ দ্রুত রান্না করার জন্য প্রেসার কুকার, নন-স্টিক পাত্র বা স্টিল-অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ির উপর নির্ভর করছেন। বাজারে প্লাস্টিকের কলসী ও স্টিলের পাত্র সহজলভ্য হওয়ায় মাটির হাঁড়ির চাহিদা কমছে দ্রুত। ফলে কুমোর সম্প্রদায় পড়েছেন মারাত্মক সংকটে।
তবে আশার আলোও একেবারে নিভে যায়নি। এখনও অনেক মানুষ পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যকর বলে মাটির হাঁড়িকে প্রাধান্য দেন। বিশেষ করে গরমকালে মাটির কলসীতে রাখা ঠান্ডা জল কিংবা পাটের আঁশে মোড়া মাটির হাঁড়িতে ভাত, এখনও অনেকে সেই স্বাদের টান অনুভব করেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাঁতেও খাবার পরিবেশনের জন্য মাঝে মধ্যে মাটির ভাঁড়, হাঁড়ির চাহিদা থাকে।সরকারের নজরদারির থাকলে এই শিল্পকে বাঁচান অনেকাংশে সম্ভবপর হবে। না হলে কয়েক বছরের মধ্যেই এই ঐতিহ্য একেবারে হারিয়ে যাবে ইতিহাসের পাতায়।





