TRENDING:

Durga Puja 2021: কয়েকশো বছর ধরে এই সাবেক দুর্গোৎসবের নবমীতে করা হয় মহামারি পুজো

Last Updated:

আনুমানিক ১৭৪২ সালে শুরু হয়েছিল এই পরিবারের দুর্গাপুজো। আজও এই পুজো (Durga Puja 2021) এলাকার মানুষের মন টানে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
দাঁতন : দাঁতন ১ নম্বর ব্লকের ঘোলাই গ্রাম পঞ্চায়েতের আঙ্গুয়া গ্রামের দাস মহাপাত্র ও মাইতি বাড়ি। আনুমানিক ১৭৪২ সালে শুরু হয়েছিল এই পরিবারের দুর্গাপুজো। আজও এই পুজো (Durga Puja 2021) এলাকার মানুষের মন টানে। শোনা যায়, প্রায় তিনশো বছর আগে ওড়িশার কটক থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন বিরিঞ্চি মহান্তি।দাঁতনের ঘোলাই-এর কাছে এসে পথ হারান তিনি। সংজ্ঞাও হারিয়ে ফেলেন  । এলাকার ব্রাহ্মণ জমিদার তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।আর কোথাও যাননি বিরিঞ্চি মোহান্তি। থেকে যান ব্রাহ্মণের কাছেই, সেরেস্তায় কাজ সামলাতে শুরু করেন ।
advertisement

ধীরে ধীরে ব্রাহ্মণের খুব কাছের মানুষ হয়ে ওঠেন বিরিঞ্চি মোহান্তি। ব্রাহ্মণের বৃদ্ধাবস্থা আসার পূর্ব মুহূর্তে ব্রাহ্মণ কাশী যাত্রা করার সংকল্প গ্রহণ করেন । তখন তিনি বিরিঞ্চি বাবুকে তাঁর জমিদারি লিখে দিতে চান। কিন্তু বিরিঞ্চি মোহান্তি ছিলেন একজন সৎ ব্যক্তি। তিনি ব্রাহ্মণকে বলেন তাঁর মেয়েকে অর্ধেক জমিদারি এবং তাঁকে অর্ধেক জমিদারি দিতে। বিরিঞ্চি বাবুর কথা মতো ব্রাহ্মণ জমিদার তার মেয়ে এবং বিরিঞ্চি মোহান্তির মধ্যে জমিদারি সমান ভাগে ভাগ করে দেন। এর পরই কাশী যাত্রা করেন তিনি।

advertisement

অর্ধেক জমিদারি সত্তা নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যান ব্রাহ্মণকন্যা। আর অর্ধেক জমিদারি সত্তা নিয়ে ঘোলাইয়ের পলাশিয়াতে থেকে যান বিরিঞ্চি মোহান্তি। এর পর জমিদার বিরিঞ্চি মোহান্তি সংসারী হন। দুই পুত্র সন্তানের বাবা হন তিনি। আবার ভাগ হয় জমিদারি। বড় ছেলে  আনা জমিদারি নিয়ে থেকে যায় পলাশিয়া গ্রামে আর ছোট ছেলে ছ আনা জমিদারি নিয়ে চলে আসেন আঙ্গুয়া গ্রামে।

advertisement

আরও  পড়ুন -বোধনেই বাজে নবমীর বিষাদের সুর, ধেনুয়ায় একদিনের দুর্গাপুজো বহু ইতিহাসের সাক্ষী

৬ আনা জমিদারি নিয়ে শ্রীবৃদ্ধি ঘটে বিরিঞ্চি মোহান্তির ছোট ছেলের জমিদারিতে। এই জমিদারির উত্তরসূরিদের মধ্যে রূপনারায়ণ দাস মহাপাত্র শুরু করেন দুর্গাপুজো। মোহান্তি থেকে দাস মহাপাত্র এই বিষয়ে একটি প্রবাদ রয়েছে । ইংরেজরা মোহান্তি জমিদারদের দাস মহাপাত্র উপাধি দিয়েছিল ৷ অচিরে সেই উপাধি আজ পদবিতে পরিণত হয়েছে। তদানীন্তন রাজার কাছ থেকেও চৌধুরী উপাধি লাভ করেছিল এই পরিবার । সেই থেকে এই পরিবারের কেউ কেউ আবার চৌধুরীও পদবি হিসেবে ব্যবহার করেন।

advertisement

আরও পড়ুন-রূপকথাও গল্পও হার মানবে, মুঘল আমলের সাক্ষী হাওড়ার সাঁঝের আটচালা

এই পরিবারের শেষ জমিদার যাদবেন্দ্র চৌধুরীর আমলে এই দুর্গাপুজোর শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। তবে জমিদারি প্রথা উঠে গেলেও দাস মহাপাত্র বাড়ির দুর্গাপুজোর রীতি থেমে থাকেনি। উত্তরসূরিরা প্রথা মেনে নিষ্ঠার সাথে এই পুজোকে আজও চালিয়ে যাচ্ছেন।

দাস মহাপাত্র ও মাইতি বাড়ির এখনকার বর্তমান উত্তরসূরিদের কথায় জমিদার আমলে যে নিয়ম ও রীতি মেনে পুজো হতো সেই নিয়ম ও রীতি আজও অব্যাহত রয়েছে । এই পুজোর আলাদা বিশেষত্ব রয়েছে । ষষ্ঠী থেকে নয়, প্রতিপদ থেকে শুরু হয় দাস মহাপাত্র ও মাইতি বাড়ির দুর্গোৎসব। জানা যায়, মহামারি দূর করার জন্য বিশেষ করে জমিদারি আমল থেকেই এই পুজোয় নবমীতে মহামারি পুজো চলে আসছে আজও।

advertisement

প্রত্যেক দিন মায়ের কাছে দেড় কুইন্টাল ধানের খই পোড়ানো হয় এবং যা প্রসাদ দেওয়ায় হয় ঠাকুরের কাছে, সেগুলি এই পরিবারের কেউ গ্রহণ করেন না সবই দর্শনার্থীদের দিয়ে দেওয়া হয় । তাঁদের মতে, মেয়েকে দেওয়া জিনিস বাপের বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয় না। পরিবারের সদস্য প্রণব দাস মহাপাত্র জানান, গ্রামের মানুষ এই পুজোকে নিজের বাড়ির পুজো মনে করেন । পুজোকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান তথা যাত্রাপালা গানের পাশাপাশি মায়ের মঙ্গলগান এবং চণ্ডীমঙ্গল গানের আয়োজন করা হয়।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
খাওয়া-দাওয়া, আড্ডা, এসব করতে গিয়ে মিস করেছেন প্রতিমা দর্শন? চিন্তা কীসের!
আরও দেখুন

সৈকত বাবু, প্রণব বাবুর পাশাপাশি অমিতাভ দাস মহাপাত্র, সমীর দাস মহাপাত্র, দীপক দাস মহাপাত্র এবং শৈশব দাস মহাপাত্র চালিয়ে যাচ্ছেন এই পুজো। পরিবারের অনেকেই দেশের নানা রাজ্যে কর্মসূত্রে বসবাস করেন, এমনকি দেশের বাইরেও থাকেন। কিন্তু  দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে এঁরা প্রত্যেকেই এক সাথে একই জায়গায় মিলিত হন।  অতীতের মতো আজও আঙ্গুয়া-সহ পার্শ্ববর্তী অসংখ্য গ্রামের বাসিন্দাদের বড় আকর্ষণ আঙ্গুয়া দাস মহাপাত্র বাড়ির এই প্রাচীন দুর্গোৎসব।

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Durga Puja 2021: কয়েকশো বছর ধরে এই সাবেক দুর্গোৎসবের নবমীতে করা হয় মহামারি পুজো
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল