বর্ধমানের মেহবুব হোসেন। নাচের জন্য রাজ্য জুড়ে তাঁর পরিচিতি। এখন ছন্দম নৃত্যালয় নামে নাচের স্কুল খুলে উপার্জন করেন। শতাধিক ছাত্র ছাত্রী। মাসে উপার্জন মাত্র সাত আট টাকা। বৈশাখ মাসে বা শীতকালে অনুষ্ঠান মিললে উপার্জন কিছুটা বাড়ে। মেহবুব বলছিলেন, মার্চ মাসে প্রথম দু সপ্তাহ ছেলেমেয়েরা এসেছিল। তারপর থেকে সব বন্ধ। বেশিরভাগের কাছ থেকেই তিন মাসের পারিশ্রমিক মেলেনি। বকেয়া বেতন দিয়ে ছেলেমেয়েদের নাচ শেখাতে পাঠাবেন না অনেকেই।
advertisement
বর্ধমানের খালুই বিল মাঠ এলাকার বাসিন্দা সুকন্যা আদিত্য। তাঁর মোহিনী নৃত্য কলামন্দিরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা শতাধিক। বললেন, এমন অবস্থার সম্মুখীন তো আগে কখনও হইনি। তাই পরিস্থিতি আরও কতটা ভয়ঙ্কর হবে বুঝে উঠতে পারছি না। যারা মনেপ্রাণে ভালোবাসে তারা হয়তো আবার আসবে। কিন্তু সেই সংখ্যাটা অনেক কম হবে।
অমৃতা দাসের নাচের স্কুল নৃত্যবাসা প্রেরণা। রাজ্য জুড়ে আড়াইশোর ওপর ছাত্রছাত্রী। অমৃতা বললেন, আলিপুরদুয়ার, শিলিগুড়ি, আসানসোল, কলকাতায় আমার ছেলেমেয়েরা রয়েছে। ডাউন উঠলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে বলা হবে আরও কয়েক মাস। তাই ক্লাস চালানো সম্ভব নয়। অন লাইনে ক্লাস করাচ্ছি। অনেকের অ্যানড্রয়েড ফোনও নেই। তারপর আসে পারিশ্রমিকের প্রশ্ন। সেই টাকা দিতে তারা আসতে পারবে কি করে। অনলাইনে পেমেন্ট করা সত্যিই অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়।
অমৃতা বলছিলেন, বর্ধমান সহ সারা রাজ্যে অসংখ্য নৃত্য শিক্ষক শিক্ষকা রয়েছেন যাঁরা এই পরিস্থিতিতে চরম সংকটে পড়েছেন। অনেকেই দুঃস্থ হয়ে পড়েছেন। শিল্পীদের আবার আত্মসম্মান প্রচন্ড। তাঁরা হাত পেতে আর্থিক সাহায্য নিতেও পারবেন না। সব মিলিয়ে দিন যত এগোচ্ছে পরিস্থিতি তাদের কাছে ততই অসহনীয় হয়ে উঠছে।
Saradindu Ghosh