খুনের ঘটনার দিনও সেই বন্ধুর সঙ্গে ফোনে ফারুক ও মৃত ছাত্রীর একাধিকবার কথা হয়েছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। বর্তমানে সেই বন্ধুর খোঁজেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, সেই বন্ধুর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। কিন্তু বর্তমানে সে পুনেতে রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে খুনের ঘটনার অনেক নতুন তথ্য হাতে আসবে বলে পুলিশ মনে করছে। তবে সেই বন্ধুর ফোন সুইচড অফ রয়েছে। তাকে খোঁজ করা হচ্ছে।
advertisement
নভেম্বর মাসের ২৬ তারিখ ভীমপুরের নারায়ণপুর এলাকায় কলিঙ্গ খালের ধারে এক ছাত্রীকে খুন করে পুঁতে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় তার প্রেমিক ফারুক মণ্ডলকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সে খুনের বিষয়টি স্বীকার করে। পাশাপাশি খুনের আগে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের কথাও পুলিশকে জানায় সে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও শারীরিক সম্পর্কের প্রমাণ মিলেছে। খালের কচুরিপানার ভিতর থেকে উদ্ধার হওয়া ছাত্রীর জামাকাপড়ে ভর্তি ব্যাগ থেকে জানা যায় যে, ঘটনার দিন রাতের অন্ধকারে স্বেচ্ছায় সে বেরিয়ে আসে। তারপর বাড়ি থেকে কিছু দূরে তাঁদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। ডিঙা নিয়ে খাল পার করার পর ফারুক ও মৃত ছাত্রীর বচসা হয়। তখন ছাত্রীর বুকের উপর বসে শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করে বলে ফারুক জানিয়েছে।
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছিল, মৃত ছাত্রী বিয়ের জন্য ফারুককে জোরাজুরি করছিল। কিন্তু ফারুক তাতে রাজি ছিল না। যার জন্যই প্রেমিকাকে সে খুন করে। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে, ফারুকের এক বন্ধুর সঙ্গে ছাত্রী প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশ জানতে পেরেছে।
পুনেতে ফারুক ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ওই বন্ধু কাজ করত। সেখানেই তাদের পরিচয় হয়। কয়েক মাস আগে ফারুক তার সেই বন্ধুকে গ্রামে নিয়ে আসে। সেখানে প্রেমিকার সঙ্গে বন্ধুর আলাপ করায় ফারুক। তাদের মধ্যে ফোন নম্বর বিনিময় হয়। সেই সময় নিজের বন্ধুর কাছে প্রেমিকাকে বোন হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল ফারুক। কিন্তু তারপর থেকেই তাদের প্রেমের সম্পর্কে বদল আসতে শুরু করে। রাতের বেলা ফারুক যতবার ওই ছাত্রীকে ফোন করত, ততবার দেখত ফোন ব্যস্ত। তখন থেকেই সন্দেহ শুরু হয়। তারপর ওই বন্ধু ফারুককে তাদের সম্পর্কের কথা জানায়। এরই মধ্যে মৃত ছাত্রীর বিয়ের সম্পর্কের কথাও ফারুক জানতে পারে। তখন থেকেই প্রেমিকার প্রতি রাগ তৈরি হয় তার। যার জন্যই ছাত্রীর এই চরম পরিণতি হয়েছিল বলে পুলিশ মনে করছে।