মেয়র জীতেন্দ্র তিওয়ারির উপস্থিতি পানাগড় বাইপাসের উদ্বোধন করলেন তৃণমূল নেতা ও শ্রম এবং আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক ৷ অনুষ্ঠানে জেলা তৃণমূল সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ও উপস্থিত ছিলেন ৷ বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র জন্য কোনও অপেক্ষা না করেই তৃণমূল নেতাদের এই কাজে তৈরি হয়েছে বিতর্ক ৷
বিষয়টি জানতে পেরে বাবুল সুপ্রিয়র মন্তব্য, ‘আমি দ্বন্দ্বে নারাজ’, ৷ সরাসরি কাউকে আক্রমণ না করে নিজের প্রতিক্রিয়ায় বাবুল জানান, ‘মানুষের ব্যবহারের জন্যই রাস্তা ৷ কেউ ২ ঘণ্টা আগে রাস্তা খুলে দিয়ে যদি আনন্দ পায় তাহলে ক্ষতি কি? আমি কোনও দ্বন্দ্বে যাব না ৷ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষও কিংকর্তব্যবিমূঢ় ৷ জাতীয় সড়ক মন্ত্রকও কিংকর্তব্যবিমূঢ় ৷ আমি নির্ধারিত সময়েই সময়ই উদ্বোধন করতে যাব ৷ এটা সরকারি অনুষ্ঠান ৷ তাই কোনও দলীয় পতাকা ব্যবহৃত হবে না ৷’
advertisement
এই ঘটনায় শুধু বিজেপি-তৃণমূল নয়, কেন্দ্র ও রাজ্যের দ্বন্দ্বও আরও একবার সামনে এল ৷ যদিও প্রায় চারমাস আগে বাইপাস নির্মানের কাজ শেষ হলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সময় না পাওয়ায় উদ্বোধন করা সম্ভব হয়নি । অবশেষে তৈরী হয়ে পড়ে থাকা বাইপাসটি উদ্বোধনের জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় নিজেই উদ্যোগী হন ।
গত ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পানাগড়কে যানজট মুক্ত করতে শুরু হয় বাইপাস নির্মানের কাজ । প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ব্যায়ে ৮.১৫ কিলোমিটার লম্বা এই রাস্তা নানা বাধা-বিঘ্ন পেরিয়ে অবশেষে শনিবার উদ্বোধন করা হল ।
এদিন থেকেই এই সড়কে সবরকম যান চলাচল করতে পারবে । এতে একদিকে যেমন সুবিধে পাবেন পানাগড়ের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা অপর দিকে স্বস্তি পাবে নিত্য যাত্রীরাও । এতদিন যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হত, তা এবার কয়েক মিনিটেই পার হয়ে যাওয়া যাবে । বাইপাস চালু হয়ে গেলে যানজটের পাশাপাশি কমে যাবে দুর্ঘটনাও ।
১৯৯৮ সালে তত্কালীন বাজপেয়ী সরকার ২ নম্বর জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ কাজ শুরু করলে পানাগড়ে বাধা দেয় স্থানীয় বাবসায়িরা । ফলে থমকে যায় ৩.৫ কিলোমিটারে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ । তারপর থেকেই নিত্য যানজট বেড়েই চলে । সমস্যায় পড়ে ব্যবসায়ীরাও । যানজটের কারনে পানাগড় বাজার থেকে মুখ ফেরায় ক্রেতারাও । একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দুর্ঘটনা ।
২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূলের সরকার গঠন হলে এলাকার মানুষ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ফের আবেদন করেন, এমনকি রাস্তায় দাঁড়িয়ে কখনও কখনও মানুষের কষ্টের কথাও শুনেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তার পরেই ২০১৩ সালে বর্ধমানে একটি সভায় তিনি বাইপাস তৈরির উদ্যোগের কথা জানিয়েছিলেন । সেইমত ২০১৪ সালে দ্রুত জমি অধিগ্রহনের কাজ শুরু হয় । তাতে কখনও বেআইনি ভাবে মাটি ভরাটের অভিযোগ, কখনও ব্রিজের দাবিতে আন্দোলন করেছেন এলাকার মানুষ ।
সব সমস্যা কাটিয়ে অবশেষে বাইপাস নির্মাণের কাজ শেষ হয় চার মাস আগে ।