চন্দননগরের শ্রীধর দাস পরবর্তী যুগে আলোর যাদুকর বলতে বাবু পালকে চেনেন অনেকে। প্যারিস থেকে দুবাই, অমিতাভ বচ্চনেরবাংলো থেকে আম্বানীর বাড়ি, দিল্লী মুম্বাইবাবু পালের আলোয় সেজেছে। সেই জাদুকর প্রয়াত হয়েছেন দুর্গা পুজোর আগে আগস্ট মাসে। শিল্পীর স্ত্রী চিত্রলেখা মেয়ে সুস্বেতা পালের কাছে সেই সময়টা ছিল কঠিন। তবু তারা সামলে উঠেছেন। পুজোয় কলকাতা দিল্লী সহ বেশ কয়েকটি কাজ করেছেন। এবার জগদ্ধাত্রী পুজোর পালা। জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রা দেখতে প্রতি বছর বহু মানুষের ভিড় হয় সাবেক ফরাস ডাঙায়। সেই শোভাযাত্রার আলোর আকর্ষণই থাকে মূলত। শোভাযাত্রায় বাবু পালের আলো দেখার অপেক্ষায় থাকেন সবাই। এবার একটি বারোয়ারীর আলো করছেন সুস্বেতারা।
advertisement
মেয়ে সুস্বেতা বি বিএ পড়ছেন। তিনি কোনদিনও ভাবেননি হঠাৎ করে তাঁকে তাঁর বাবার কাজের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতে হবে। ভালবাসার কাজ অভিনব আলো তৈরি করা। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সেই কাজকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই তিনি এসেছেন আলোকশিল্পে। তবে এই কাজ করতে করতে তিনি নিজেই এখন বুঝতে পারবেন কেন তাঁর বাবা অভিনব আলো তৈরি করার জন্য ‘পাগল’ ছিলেন। এই বছরও তৈরি হচ্ছেন নতুন মেকানিক্যাল আলো। তাঁর কথায়, “বাবার অসুস্থতার সময় জগদ্ধাত্রীর আলোর বরাত এসেছিল। বেশোহাটার পুজোর ৭৫ বছর তাই তাদের আলোটাই করছি। সার্কাস থিমের সেই আলো তৈরিকরতে ব্যস্ততা এখন পঞ্চানন তলার কারখানায়। এলইডি ল্যাম্প থেকে মেকানিকালের কাজ দেখা যাবে তাতে।”
এই বিষয়ে তার মা চিত্রলেখা পাল জানান, বিগত দুবছর ধরেই যখন থেকে বাবু পাল অসুস্থ ছিলেন তখন থেকেই এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন তারা। আলোর কাজটা শুধুমাত্রই ব্যবসা নয়, এটি একটি শিল্পও। প্রথমদিকে তিনি কাজ করতেন যাতে তাঁর স্বামীর শরীর ভাল থাকে। কারণ আলোর কাজ ভাল হলেই তাঁর স্বামী আনন্দ পেতেন। পরবর্তীতে স্বামী মারা যাওয়ার পরে এখন সমস্ত দায়িত্ব পড়েছে মা ও মেয়ের কাঁধে। স্বামীর স্বপ্ন পূরণে নতুন অঙ্গীকার করেছেন চন্দননগরের মা ও মেয়ে। তিনি চান, আগামী দিনে শুধু পুরুষরা নয় মহিলারাও এগিয়ে আসুক এই আলোর শিল্পের দিকে।
রাহী হালদার