পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় একমাস ধরে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সমস্ত এলাকা রেইকি করেছিল ধৃতদের একজন। তার নাম বিক্রম ঠাকুর। বর্ধমানের শক্তিগড় সিনেমাতলা এলাকার বাসিন্দা হলেন এই বিক্রম। বিক্রমের কাজ ছিল মেডিক্যাল কলেজের বিভিন্ন অধ্যাপক, চিকিৎসকেরা কীভাবে আসেন, কখন আসেন, কী পরেন, কী ভাবে কথা বলেন, কখন ঘর ফাঁকা রেখে বেরিয়ে যান...এই সমস্ত কিছু রেইকি করা। এমনকী, কোনওভাবে ধরা পড়ে গেলে কোন রাস্তা দিয়ে তারা পালাবে তারও জায়গা ঠিক করে রেখেছিল তারা।
advertisement
এরপর কোনও অধ্যাপক ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে, সেই ঘরেই বসানো হত প্রতরণার পসরা। ভর্তি হতে আসা ছাত্র বা তাঁদের আত্মীয়েরা প্রতারকদের সঙ্গে দেখা করতেন সেখানেই। দেখতেন, মেডিক্যাল কলেজেই সবকিছু হচ্ছে, অধ্যাপক নিজে কথা বলছেন, ফলে সহজেই তাঁদের কথা বিশ্বাস করে নিতেন প্রতারিতেরা। বিক্রম বা তাঁর শাগরেদেরা যে নকল অধ্যাপক, তা বুঝে উঠতে পারতেন না কেউই। অনেকেই দশ লক্ষ থেকে কুড়ি লক্ষ টাকা দিয়ে মার্কশিট, সার্টিফিকেটের আসল কপি জমা দিয়ে ডাক্তার হওয়ার আবেদন জমা দিতেন। এরপরে টাকা ফেরত চাইতে গেলেই পড়তেন সমস্যায়। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি করানোর নামে প্রতারণার ঘটনায় চারজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: শহর বাড়ছে আতঙ্ক! এবার কলকাতায় অ্যাডিনোভাইরাসে মৃত্যু কিশোরীর
গোটা ঘটনায় পুলিশের আতস কাচের নীচে মেডিক্যাল কলেজের দু'জন নিরাপত্তাকর্মীও। যাঁদের সঙ্গে যোগসাজস করে এই প্রতারকের দল অনেক তথ্য পেয়েছে বলে অনুমান। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের নামী চিকিৎসক থেকে অধ্যক্ষদের সঙ্গে প্রতারকদের অনেকেরই ছবি রয়েছে। সেই ছবি দেখিয়েই এদের ব্ল্যাকমেল শুরু হতো। পার্টির সামনেই সেই আধিকারিকদের নকল ফোন করা হত। গোটা বিষয়টি সামনে এলে প্রতারণার অর্থ লক্ষ ছাড়িয়ে কোটিতে পৌঁছবে বলে মনে করছে পুলিশ। ডিএসপি রাকশ সিং বলেন, "প্রতারকদের আদালতের নির্দেশে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে। যে তথ্যই উঠে আসছে তা আদালতে জানানো হবে। তদন্তের স্বার্থে কোন কথাই বলা যাবে না।"
Saradindu Ghosh