দলীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই বৈঠকে বুথ স্তরে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি পর্যালোচনা, দুর্বলতা চিহ্নিতকরণ এবং ২০২৬ সালের নির্বাচনের জন্য প্রাথমিক রূপরেখা তৈরির ওপর জোর দেওয়া হয়। দলের এক নেতা সংবাদমাধ্যমে বলেন, “এটি আমাদের সাংগঠনিক কাঠামো এবং প্রস্তুতির একটি বিস্তারিত পর্যালোচনা ছিল। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা আমাদের বর্তমান অবস্থান, অর্থাৎ লক্ষ্যে পৌঁছনোর ক্ষমতা এবং দক্ষতার একটি বাস্তব চিত্র চেয়েছেন।”
advertisement
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, আসন্ন ভোটার তালিকা সংশোধনের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে চাইছে কমিশন। যদিও প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও উৎসবের মরশুমে এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৭৭টি আসনে জয়লাভ করেছিল। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে দলটি প্রায় ৯০টি বিধানসভা আসনে এগিয়ে ছিল। ২০১৯ সালে দলটি ১২১টি বিধানসভা আসনে এগিয়ে ছিল, যা তারা এবার অতিক্রম করার লক্ষ্য নিয়েছে। ২৯৪ সদস্যের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সরকার গঠনের জন্য ১৪৮টি আসন প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: রোহিত-কোহলির বিশ্বকাপ খেলার উপর চরম শর্ত চাপিয়ে দিল বিসিসিআই! না মানলেই শেষ কেরিয়ার
শাসক তৃণমূল কংগ্রেস বিজয়া সম্মিলনীর মাধ্যমে ভোট-পরবর্তী জনসম্পর্ক কর্মসূচি শুরু করার পর বিজেপিও অক্টোবর ও নভেম্বর মাস জুড়ে একাধিক গণসংযোগ কর্মসূচি আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর পর ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তাদের নির্বাচনী প্রচার আরও তীব্র হবে। বিজেপির এক রাজ্য নেতা বলেছেন, “পুজোর পর আমাদের মনোযোগ ২০২৬ সালের নির্বাচনের দিকে। পর্যবেক্ষকরা বাস্তবতা পর্যালোচনা করছেন এবং বুথ-স্তরের সংগঠন শক্তিশালী করাই আমাদের প্রধান কাজ।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এত তাড়াতাড়ি কৌশলগত বৈঠক শুরু করা বিজেপির দৃঢ় সংকল্পের ইঙ্গিত, যাতে তারা ২০২১ সালের নির্বাচনের মতো সাংগঠনিক জড়তা এড়াতে পারে। বিজেপি নেতৃত্ব তাদের কর্মীদের ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়ায় সক্রিয় থাকার নির্দেশ দিয়েছে, যা এই মাসের শেষের দিকে ঘোষণা হওয়ার কথা। এক বিজেপি নেতার কথায়, “এসআইআর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কর্মীদের নিশ্চিত করতে হবে যেন প্রকৃত ভোটাররা বাদ না পড়েন এবং প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ হয়।” দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ভূপেন্দ্র ও বিপ্লব একের পর এক বৈঠক করে চলেছেন, যার লক্ষ্য হল যেসব অঞ্চলে দলের সংগঠন দুর্বল, সেখানে দলের ভিত মজবুত করা।
দলীয় সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রার্থী নির্বাচন এবং নির্বাচনী এলাকার ম্যাপিংয়ের জন্য প্রাথমিক কাজ শুরু করে দিয়েছে। যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে নেওয়া হবে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি খসড়া তালিকা তৈরি করা হচ্ছে, কিন্তু এটি চূড়ান্ত নয়। এখনকার মূল লক্ষ্য হলো সাংগঠনিক সচলতা বৃদ্ধি।