পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামে জোড়াফুলের সঙ্গে কড়া টক্কর দিয়েছে বিজেপি ৷ কার্যত শূন্য থেকে শুরু করেই জঙ্গলমহলে বিজেপির এই উত্থান। দুই জেলাতেই হার বিদায়ী জেলা সভাধিপতির। আদিবাসী অধ্যুষিত দুই জেলাতেই ৪০ শতাংশের ওপর ভোট পাওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু পঞ্চায়েতে বোর্ডও গড়ছে গেরুয়া শিবির ৷ আর এতেই তৃণমূলের কপালে চিন্তার ভাঁজ ৷ তাই জঙ্গলমহলে নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে আদিবাসী সংগঠনের উপর জোর দিচ্ছে তৃণমূল ৷ পাশাপাশি পঞ্চায়েত নির্বাচনের সমস্ত কর্মকাণ্ড শেষ হতেই খুব শীঘ্রই আদিবাসী সম্মেলন করার ভাবনাচিন্তা করছে তৃণমূল ৷
advertisement
যে জঙ্গলমহল থেকে পরিবর্তনের সূচনা, পঞ্চায়েত ভোটে তাই যেন অশনি সংকেত দিয়ে গেল রাজ্যের শাসকদলকে। কার্যত শূন্য থেকে শুরু করে পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামে অবিশ্বাস্য উত্থান বিজেপির।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের নির্বাচনে যে ঝাড়গ্রামে মাত্র পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন পেয়েছিল বিজেপি, সেই জেলাতেই এই নির্বাচনে শাসক দলকে সমানে টক্কর দিয়ে অন্তত ২৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি। ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের এখনও ত্রিশঙ্কু। এর মধ্যে আরও ৩টি বিজেপির দখলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাহলে বিজেপির আরও ৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতিতেও ৬০টি আসনে জয়ী বিজেপি-র প্রার্থীরা।
ক্ষমতায় আসার পরই জঙ্গলমহলের উন্নয়নে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে একাধিক প্রকল্প চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২ টাকা কেজি চাল,স্থানীয় যুবকদের সিভিক পুলিশ হিসাবে নিয়োগ - রাজ্যের উন্নয়ন প্রকল্পের জেরে এলাকায় কোণঠাসা হয়ে পড়ে মাওবাদীরাও। তারপরেও কেন এই ফল?
শাসকদলের বিপর্যয়ের পিছনে সামনে আসছে বেশ কয়েকটি কারণ। জেলা নেতৃত্বের গাফিলতি, প্রার্থী বাছাই ও মানুষের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ হয়নি। ভোটারদের ক্ষোভও টের পাননি স্থানীয় নেতৃত্ব।
এলাকায় নিয়মিত জনসংযোগের কাজ হয়নি বলে নিজেদের ব্যার্থতা স্বীকার করলেন তৃণমূল নেতৃত্বরা ৷
রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েত প্রতিনিধি ও শাকদলের একশ্রেণীর কর্মীর বিরুদ্ধে। এর পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের অন্তর্ঘাতও প্রকাশ্যে এসেছে ৷ সরকারি প্রকল্পের দূর্নীতি থেকে মানুষের ক্ষোভ - সব জেনেও চুপ থাকার অভিযোগ উঠল বিডিও সহ স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ৷
শাসক দলের এই সমস্ত ব্যর্থতার মাঝেই গত কয়েক বছর ধরে আদিবাসীদের মধ্যে কাজ করে নিজেদের জায়গা দখল করে নিয়েছে আরএসএস। আর সেই সুফল ঘরে তুলেই নতুন উৎসাহে ঝাঁপাতে চাইছে গেরুয়া শিবির।