পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে এখনও উত্তপ্ত রসপুঞ্জ ৷ প্রায় ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলছে অবরোধ। মঙ্গলবার সন্ধেয় দোষীর গ্রেফতারির দাবিতে অবরোধ হটাতে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ ৷ পাল্টা তারই প্রতিবাদে এদিনের অবরোধ ও পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙচুর করা হয় ৷ ফাঁড়ির আসবাবপত্র বাইরে এনে আগুন লাগিয়ে দেয় স্থানীয়রা ৷
সোমবার মদ্যপ শেখ কাল্লু গাড়ির ধাক্কাতেই একজন মা ও তাঁর স্কুল পড়ুয়া ছেলের মৃত্যু হয়। তার জেরে মঙ্গলবার রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। সোমবারের দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত ফিরোজ আলি মোল্লাকে গ্রেফতারের দাবিতে বিষ্ণুপুরের রসপুঞ্জ মোড় অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। বিকালে অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশকে লক্ষ করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি। পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিশ ও র্যাফ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি করে বিক্ষোভকারীরা ৷ অবরোধকারীদের ইটবৃষ্টিতে জখম হন স্কুলপড়ুয়ারাও। ঘাতক গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে বিষ্ণুপুর।
advertisement
সোমবারের দুর্ঘটনা আচমকা কেড়ে নিয়েছিল মা-ছেলের প্রাণ। বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় আহত হয়েছিলেন আরও কয়েকজন। দুর্ঘটনার পর থেকেই বিষ্ণুপুরের রসপুঞ্জে শুরু হয় বিক্ষোভ-অবরোধ। যা সরাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। রাত পেরোলেও পরিস্থিতিতে যে এতটুকু স্বাভাবিক হয়নি, তার প্রমাণ মেলে মঙ্গলবার সকালে। অভিযুক্ত গাড়িচালক ফিরোজ আলি মোল্লা ওরফে কালুকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসীরা। গাছের গুঁড়ি, বাঁশ, ইট ফেলে অবরোধ করা হয় বিষ্ণুপুরের রসপুঞ্জ মোড়।
ঘটনাস্থলে যায় বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। নামানো হয় র্যাফও। তারপরই পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় বচসায় জড়ান অবরোধকারীরা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আশপাশের থানাগুলি থেকে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
ঘটনাস্থলে যান ঠাকুরপুকুর মহেশতলার বিডিও সোহিনী মুখোপাধ্যায়। অবরোধকারীদের সঙ্গে আলোচনাতেও বসেন তিনি। কিন্তু কোনও রফাসূত্র না মেলায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে কার্যত অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিশকে লক্ষ করে ইটবৃষ্টি শুরু করে উত্তেজিত গ্রামবাসীরা। পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিশ এবং র্যাফ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসের শেলও।
প্রবল ইটবৃষ্টির কারণে পিছু হঠতে বাধ্য হয় পুলিশ। খালি করে দেওয়া হয় রসপুঞ্জ ফাঁড়িও।
রসপুঞ্জ ফাঁড়ি ভাঙচুড় করে ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়িতেও। দু'পক্ষের সংঘর্ষে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিষ্ণুপুর।