মুর্শিদকুলির সাধের মুর্শিদাবাদেও এর বহুল ব্যবহার দেখা যায় পরবর্তীতে। যদিও কলকাতায় এর আগমন লখনউয়ের নির্বাসিত নবাব ওয়াজেদ আলির শাহর হাত ধরে। একসময়, লালবাগের নবাবি ইমামবাড়ায়, রমজান মাসে রোজাদারদের জন্য ইফতারে বিতরণ করা হত বিরিয়ানি। কিন্তু এখন সেই নবাবও নেই, নেই তাঁর রাজ্যপাটও। তাই রোজাদারদের জন্য বরাদ্দ বিরিয়ানির পরিবর্তে দেওয়া হয় তন্দুরি রুটি, ছোলার ডাল, ফল ইত্যাদি। যা নেওয়ার জন্য আজও ভিড় করেন রোজাদাররা। হাতিশালে হাতি, ঘোড়াশালে ঘোড়া, কাছারিবাড়ি, কর্মচারী, পাইক বরকন্দাজ নহবতখানা, সুসজ্জিত পুষ্পোদ্যান, অতিথিশালা না থাকলেও, রমজান মাসে খাবার বিতরণ আজও প্রথা মেনেই হয়ে চলেছে।
advertisement
আরও পড়ুন : অসহ্য যন্ত্রণার দাঁতের গঠনও বদল, ‘অপরাজিত’ সত্যজিৎকে জিতু-অনীকের কুর্নিশ ছবিতে
ইতিহাস বলছে, এই নিজামত ইমামবাড়া ১৭৪০ সালে তৈরি করেছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। পৃথিবীর বৃহত্তম এই ইমামবাড়া ১৮৪২ ও ১৮৪৬ সালে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ায়, ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে নবাব নাজিম মনসুর আলি খাঁ-র আমলে পুনর্নির্মিত হয়েছিল। পরবর্তীতে নবাব ওয়াসিফ আলি মির্জা রমজান মাসে চালু করেন খাবার দেওয়া।
আরও পড়ুন : কেক সাজিয়ে দিল মেয়ে, অভিষেকের জন্মদিনে আন্তরিক আয়োজন দেখুন ছবিতে
লন্ডনে পড়াকালীন নবাব ওয়াসিফ আলির পক্ষে রোজা পালন সম্ভব না হওয়ায় প্রাচীন নিয়মানুসারে ষাট জনকে খাওয়ানো হত। সেই ধারা আজও বহন করে চলেছে সরকার। ১৯৮৫ সালে রাজ্য সরকারের আইন বিভাগ এটি অধিগ্রহণ করে। রমজান মাসে রোজা রাখা ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এখান থেকে রোজার একমাস খাবার পেয়ে থাকে। তন্দুরি রুটি, ছোলার ডালের সঙ্গে ফল, আবার কখনও বিরিয়ানিও। এখন প্রায় ২০০ জনকে দেওয়া হয় এই খাবার। সারাদিন উপোস করে সন্ধ্যায় ইফতার সারেন নবাবী ইমামবাড়ার খাবার খেয়ে। যার খরচ রাজ্য সরকার বহন করে। পাচক জানান, নবাবি আমলের জাঁকজমক আর না থাকলেও এখনও ঘুগনি, কচুরি, ছোলার ডাল, রুটি, ফল মানুষকে দেওয়া হয়।
( প্রতিবেদন-কৌশিক অধিকারী)