আরও পড়ুন: খাটিয়াই যেন অ্যাম্বুল্যান্স! কেউ অসুস্থ হলেই আকাশ ভেঙে পড়ে, এ কী অবস্থা মালদহে
দাসপুরের সামাট চাতাল সংলগ্ন এলাকা এক সময় ছিল বাবুই পাখিদের স্বর্গরাজ্য। তালগাছের সারিতে ঝুলত অসংখ্য শিল্পসম্মত বাসা। কিন্তু সময় পাল্টেছে। তালগাছ কেটে ফেলা হয়েছে রাস্তাঘাট সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণের তাগিদে। কিছু গাছ নষ্ট হয়েছে বাজ পড়ে।
advertisement
আরও পড়ুন: কাটোয়া শহরে ‘ফেসবুক মিটআপ’, অনুষ্ঠানে ‘অশ্লীল’ বিনোদন, অশালীন অঙ্গভঙ্গির অভিযোগ দায়ের!
ফলে বাবুই পাখিরা বাধ্য হয়ে বাসা বানাতে শুরু করে বিদ্যুতের উঁচু খুঁটির তারে।বৃষ্টিতে ভিজে গিয়ে বিদ্যুৎ তার সংস্পর্শে এসব বাসা থেকে শক লাগতে পারে— যা থেকে বড় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা। আগুন লাগতে পারে, পাখিরা মারা যেতে পারে। একদিকে প্রাকৃতিক শিল্পের ধ্বংস, অন্যদিকে প্রাণের ঝুঁকি।এই সমস্যা নজরে আসতেই উদ্যোগ নেয় ঘাটাল বিদ্যুৎ ডিভিশন। বহু ভাবনা-চিন্তা করে পাখিদের নতুন বাসার জায়গা করে দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের খুঁটির একেবারে পাশেই একটি নতুন খুঁটি পুঁতে তার উপর ফ্রেম বসান হয়, যাতে বাবুই পাখিরা ঝুলিয়ে রাখতে পারে তাদের বাসা।সাবধানে বিদ্যুৎ খুঁটির তার থেকে বাসাগুলি খুলে এনে স্থানান্তরিত করা হয় ওই নতুন কাঠামোয়। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা ও গ্রামবাসীরা মিলেই এটি বাস্তবায়ন করেন।এই উদ্যোগে ঝুঁকি এড়ানো গেছে, আবার বাবুইদেরও বাসা হারাতে হয়নি। বর্তমানে সেই নতুন খুঁটিতে ঝুলছে বেশ কয়েকটি বাবুই বাসা। এখন সেই নতুন ফ্রেম খুঁটি ঘিরেই দৃষ্টি বিদ্যুৎ দফতরের এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের। তারা আশায় বুক বাঁধছেন শীঘ্রই এই খুঁটিতেই কিচিরমিচির করে উঠবে বাবুইয়ের কলরব।এ এক বিরল দৃষ্টান্ত— যেখানে সরকারি দফতর শুধুমাত্র দায়িত্ব পালন করে থেমে থাকেনি, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার এক বাস্তব দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন: এলোপাথাড়ি কোপ, রক্তে ভেসে গিয়েছে গোটা ঘর! ভাইপোকে কেন কুপিয়ে খুন করল কাকা?
পরিবেশপ্রেমীরা সাধুবাদ জানিয়েছেন।স্থানীয়রা বলছেন, এই উদ্যোগ শুধু বাবুই নয়, আমাদের মনুষ্যত্বকেও বাঁচাল। যেখানে আজ বন কাটছে, প্রাণ হারাচ্ছে, সেখানে এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে অনুকরণীয়। এই ঘটনা প্রমাণ করল — প্রযুক্তি আর প্রকৃতি পরস্পরের বিরোধী নয়, সহাবস্থানই তাদের ভবিষ্যৎ, একটা তালগাছ না থাকলেও, শিল্প এখনো বেঁচে আছে— বাবুইয়ের বাসায়, আর কিছু মানুষের হৃদয়ে।