মেয়ে আমেরিকায় চাকরি করে জানা ছিল। হঠাৎ ভোপালের সাকেতনগরে সিমেন্ট বাঁধানো অবস্থায় মেয়ের কঙ্কাল উদ্ধারে হতবাক বাঁকুড়ার শর্মা পরিবার। তার উপর খুনি সেই ছেলে, যে আকাঙ্খার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে গত বছর অক্টোবরে রবীন্দ্রসরণির বাড়িতে এসেছিল। আকাঙ্খার কাছে আমেরিকায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। আকাঙ্খা শর্মার দেহ উদ্ধারের পর নিজেদের ঘরবন্দি করে রেখেছিলেন। এরপর রবিবারই সন্তানকে হারানোর প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে মুখ খুললেন আকাঙ্খার বাবা শিবেন্দ্রকুমার শর্মা ও মা শশীবালা শর্মা।
advertisement
বাঁকুড়ায় উদয়নের আসার খবর ১৬ অক্টোবর, ২০১৬-তে আকাঙ্খার মোবাইল থেকে হোয়াটসঅ্যাপে জানানো হয় ৷ ১৮ অক্টোবর, ২০১৬-তে বাঁকুড়ায় আসে উদয়ন। মুখে ঝরঝরে ইংরেজি, বাংলা-হিন্দিও পরিষ্কার ৷ রবীন্দ্রসরণির বাড়িতে পৌঁছে আমেরিকায় মেয়ের সহকর্মী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচয় দেয় উদয়ন ৷ বেশভূষায় জেন্টলম্যান উদয়ন আমেরিকায় কাজের ধরন নিয়ে গল্প শোনায় ৷ আকাঙ্খার ভাই আয়ূষের সঙ্গেই নিচের তলার ঘরে রাত কাটায় উদয়ন ৷
গত বছর ২৩ জুন বাঁকুড়ার বাড়ি ছেড়েছিল আকাঙ্খা। তারপর থেকে মাঝে মাঝেই বাবা ও দাদার মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ আসত।
পরিবারের দাবি,
-- ২৯ জুনের পর থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত আকাঙ্খা ভয়েস মেসেজ পাঠাত
-- আকাঙ্খার ভয়েস ম্যাসেজ এলে তা বোঝা যেত না
-- মনে হত কেউ আচ্ছন্ন অবস্থায় কথা বলছে
সাইকো কিলার উদয়ন পুলিশকে জানিয়েছে, গত বছর ১৪ জুলাই আকাঙ্খাকে খুন করে সে। তারও প্রায় ৫ বছর আগে নিজের মা-বাবাকে। এরপর ২০১৬-র অক্টোবরে বাঁকুড়ায় আসে উদয়ন। আকাঙ্খার সঙ্গে উদয়নের সম্পর্কের কথা জানত একমাত্র শর্মা পরিবারই।
তাই তদন্তকারীরা মনে করছেন, পথের কাঁটা সরাতে বাঁকুড়ায় এসেছিল উদয়ন দাস। রায়পুরে মাটি খুঁড়ে মা-বাবার হাড়গোড়, ভোপালের সাকেতনগরে সিমেন্টের বেদি খুঁড়ে প্রেমিকার কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে। বাঁকুড়ার রবীন্দ্রসরণিতেও উদ্ধার হতে পারত একের পর এক লাশ। আনসলভড কেসে চিরদিনের জন্য আড়ালে থেকে যেত সিরিয়াল কিলার উদয়ন।