এদিন ভোরে মাকে স্নান করিয়ে রাজরাজেশ্বরী রূপে সাজিয়ে তোলার পর শুরু হয় পুজোপাঠ। তমলুকের শক্তিপিঠের প্রাচীন নাম বিভাস। দেবী এখানে বর্গভীমা বা ভীমারূপা নামে অধিষ্ঠিত। ভৈরব সর্বানন্দ মতান্তরে কপালি। মহামায়া সতীর দেহাংশের মধ্যে বাম গুল্ফ বা বাম পায়ের গোড়ালি পড়েছিল এখানে।
advertisement
১৪৬৬ খ্রিস্টাব্দ মুকুন্দরামের চন্ডীমঙ্গল কাব্যে গোকুলে গোমতী নামা তাম্রলিপ্তে বর্গভীমা এবং মার্কণ্ডেও পুরাণে আছে দেবী বর্গভীমার উল্লেখ। তমলুকে দেবী বর্গভীমা মন্দিরে কালীপুজোর বিশেষ পুজো ব্রহ্ম মুহূর্ত থেকে শুরু হয়েছে। দিনভর পুজোর পাশাপাশি রাতে মহাযজ্ঞ হবে বর্গভীমা মন্দিরে।
এ বিষয়ে মন্দিরের পুরোহিত প্রণব চক্রবর্তী জানান, “সতীর একান্ন পীঠের এক পীঠ তমলুকের দেবী বর্গভীমা, বর্তমানেও নিষ্ঠার সঙ্গে পুজিত হন মা। শক্তি পুজো শুরুর আগে রয়েছে অনুমতি নেওয়ার প্রথা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সদর ঐতিহাসিক তাম্রলিপ্ত বা তমলুকের আজও মধ্যমণি মা বর্গভীমা। কয়েক হাজার বছর ধরে শক্তি স্বরূপিণী আদ্যাশক্তি মহামায়া রূপে দেবী বর্গভীমার আরাধনা চলে আসছে।” ওড়িশি স্থাপত্যের আদলে এই দেউলের উচ্চতা প্রায় ৬০ ফুট। মন্দিরের দেওয়ালে টেরাকোটার অজস্র কাজ। তার মধ্যেই মন্দিরের গর্ভগৃহে কালো পাথরে তৈরি মায়ের মূর্তি বিরাজ করছে দেবী উগ্রতারা রূপে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তমলুক পরগনায় বর্তমানে ক্লাব প্রতিষ্ঠান হোক বা বাড়ির, প্রথমে দেবী বর্গভীমা মাকে পুজো দিয়ে অনুমতি নিয়ে শুরু হয় পুজো। দেবী বর্গভীমা মায়ের মন্দিরে সকাল থেকেই পুজো দেওয়ার লম্বা লাইন। শুধু মেদিনীপুর জেলার মানুষজন নয় পার্শ্ববর্তী হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ বিভিন্ন জেলার মানুষ কালীপুজোর দিন মন্দিরে পুজো দেওয়ায় জন্য ভিড় করেন। দীপান্বিতা অমাবস্যায় রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিত হন দেবী বর্গভীমা। সারাদিন ধরে চলে দেবীর নানান ধরনের উপাচার-সহ পুজোপাঠ।