৯ মার্চ রায়না বাজারের ডাকঘরের কাছে নিজের বাড়িতে খুন হন চুয়াত্তর বছর বয়সী জীবনকানাই সেনগুপ্ত। সে সময় বিছানায় শুয়ে ছিলেন তাঁর পক্ষাঘাতগ্রস্ত স্ত্রী। চেয়ারে বসে টিভি দেখছিলেন জীবনকানাইবাবু। পাশের ঘরে ছিলেন তাঁর বৌদি। তিনি শব্দ পেয়ে ভেতরে এসে দেখেন ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েছেন জীবনকানাইবাবু। দুজনকে তিনি পালিয়ে যেতে দেখেন। সন্ধ্যারাতে নিরীহ বৃদ্ধ খুনের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিশেষ দল গঠন করে তদন্তে নামে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। দশ দিনের মধ্যে সেই খুনের ঘটনার কিনারা করতে সক্ষম হলো পুলিশ।
advertisement
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে পড়ে গিয়ে জীবনকানাই বাবুর বৌদির কোমরের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। সেসময় বর্ধমানের সরাইটিকর থেকে এক মহিলা আয়ার কাজ করতে ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। তিনি অভিযুক্ত সিরাজের শাশুড়ি। ওই বৃদ্ধ দম্পতির আলমারিতে বেশ কয়েক লাখ টাকা আছে তা গল্পের সময় জানতে পারে সিরাজ। এরপর সে ওই বাড়িতে ডাকাতির ছক কষে। গৌতম ও জয়ন্তকে নিয়ে অপারেশন করার পরিকল্পনা করে সিরাজ। ঘটনার আগের দিন তারা রেইকিও করে যায়।
তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন পাঁচিল টপকে তারা ঘরের ভেতরে চলে যায়। হঠাৎই তাদের ঘরের মধ্যে দেখে বৃদ্ধ জীবনকানাইবাবু চিৎকার শুরু করেন। তাঁকে চুপ করাতে বুকের কাছে রিভলভার ধরেছিল অভিযুক্তরা। তখনই গুলি চলে যায় বলে স্বীকার করেছে ধৃতরা। এরপরই তারা কোনও কিছু না নিয়েই চম্পট দেয়।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে ও মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ধৃতদের নাগাল পাওয়া সম্ভব হয়েছে। এই খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত বেলকাশের জয়ন্ত সাঁতরা এলাকার বিজেপি নেতা হিসেবে পরিচিত সে বিজেপির বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের সাতাশ নম্বর জেলা পরিষদের শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ বলে জানা গিয়েছে। তাদের নেতার নাম খুনের ঘটনায় জড়িয়ে যাওয়ায় ভোটের মুখে অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছে, আইন আইনের পথে চলবে। তবে মিথ্যা মামলায় আমাদের নেতাকে ফাঁসানো হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে দল খোঁজ খবর নেবে।
Saradindu Ghosh