ইতিহাস প্রাচীন শহর বর্ধমান। আড়াই হাজার বছরের পুরনো জনপদ। এই শহরের কাঞ্চন নগর হাজার বছরের প্রাচীন। জৈন তীর্থঙ্কর মহাবীর কিছু সময় কাটিয়েছিলেন এ'শহরে। এসেছেন গুরু নানক।
মুঘল সম্রাজ্ঞী নূরজাহান শের আফগানের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন এ'শহরে। তখন তাঁর নাম ছিল মেহেরউন্নিসা। এই শহরে মসজিদ গড়েছেন শের শাহ। দীক্ষালাভ করেছেন সাধক কবি কমলাকান্ত।
advertisement
বর্ধমান শহরের প্রবেশ দ্বার কৃষক সেতু। নীচ দিয়ে বয়ে গিয়েছে দামোদর। রোদের ছটায় সোনা রঙ তার স্ফটিক শুভ্র জলের। নদীর পাড়ে উলটে অলস নৌকা। গুনগুনিয়ে গান গাইতে গাইতে মাছ ধরে জেলেরা। শতাব্দী প্রাচীন গাছ গাছালিতে ঘেরা গোলাপবাগ। শান্ত সবুজে ঘেরা শীতল পরিবেশ। পাশেই রমনাবাগান অভয়ারণ্য। মিনি জুতে রয়েছে প্রচুর হরিণ, চিতা, ভালুক সহ হরেক পশু পাখি। পাশেই তারামন্ডল, বিজ্ঞান কেন্দ্র।
শহরের মাঝখানে সুদৃশ্য রাজবাড়ি মহাতাব মঞ্জিল। সেখানে রয়েছে ইতিহাসের নানান নিদর্শনে ঠাসা মিউজিয়াম। কাছেই শের শাহ প্রতিষ্ঠিত কালো মসজিদ, আকবরের স্নেহধন্য খক্কর শাহর দরগা। এখানেই মেহের মহলে থাকতেন মেহেরউন্নিসা। কাছেই পুরাতনচকে শের আফগান কুতুবউদ্দিনের সমাধি। রয়েছে নবাববাড়ি। সেখানে থাকতেন ঔরঙ্গজেবের নাতি আজিম উন শান। থেকেছেন লর্ড ক্লাইভও।
শহরের আলমগঞ্জে রয়েছে বর্ধমানেশ্বর শিব। এত বড়ো শিবলিঙ্গ এরাজ্যে দ্বিতীয়টি নেই। রয়েছে বর্ধমানের মহারানী প্রতিষ্ঠিত একশো আট শিবমন্দির। কাঞ্চননগরে রয়েছে পাল যুগের কঙ্কালেশ্বরী কালী। মিঠাপুকুরে সোনার কালী মা ভূবনেশ্বরী। বোরহাটে রয়েছে সাধক কমলাকান্ত প্রতিষ্ঠিত কালী মন্দির। শহরের মাঝে রাঢ় বঙ্গের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলার মন্দির। দেবীর কষ্টিপাথরের মূর্তি হাজার বছরেরও বেশি পুরনো। আরও অনেক ইতিহাস প্রাচীন মন্দির মসজিদ হেরিটেজ বিল্ডিং ছড়িয়ে রয়েছে শহরজুড়ে।
তাহলে আর দেরি কেন? এবার পুজোয় আপনার ডেস্টিনেশন হোক বর্ধমান। হাওড়া বর্ধমান কর্ড বা মেন লাইন লোকালে সহজেই বর্ধমানের আসা যায়। রয়েছে হাওড়া ও শিয়ালদহ থেকে প্রচুর এক্সপ্রেস ট্রেনও। দু'নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে দু'ঘণ্টায় কলকাতা থেকে আসা যায় বর্ধমানে।থাকার জন্য রয়েছে অনেক হোটেল,লজ। ভাড়া আপনার নাগালের মধ্যেই।
SARADINDU GHOSH