কিন্তু হঠাৎ নেমে আসে অন্ধকার। লক্ষ্মীর স্বামী যখন মারা যান তখন তাঁর স্বামীর মৃতদেহ ছাড়ছিল না হাসপাতাল। হাসপাতালে নিয়ম অনুযায়ি কেউ যদি স্বাক্ষর না করেন তাহলে মৃতদেহ ফেরত দেওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে একসময় নিরক্ষর লক্ষী মাল স্বাক্ষর করে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন তার স্বামীর মৃতদেহ। লক্ষ্মীর ইচ্ছা জীবনে এগিয়ে যাবেন তিনি। ওন্দা যুব সমাজের সহায়তায় এই কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করেন সেইসব প্রান্তিক খুদে ছাত্র-ছাত্রীরা যারা গৃহশিক্ষকের খরচবহন করতে পারবেন না।
advertisement
এই পাঠশালায় লক্ষ্মী একজন অনুপ্রেরণা। পড়াশোনায় অত্যন্ত আগ্রহী লক্ষ্মী মাল আগে থেকে এসে বসে থাকেন পাঠশালায়। পাঠশালার দিদিমণিরা কোনও কারণে অনুপস্থিত থাকলে দিদিমনিদের বাড়ি থেকে গিয়ে ডেকে আনেন লক্ষ্মী মাল নিজেই। যেখানে বাঁকুড়ার মত প্রান্তিক একটি জেলায় তফশিলি উপজাতির গৃহবধূদের পড়াশোনা থেকে বিমুখ হতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন কারণে সেখানে লক্ষ্মী মালের এই জীবন গাথা এবং পড়াশোনার প্রতি অগাধ প্রেম একটি বার্তা বহন করে।
শিক্ষাই স্বাধীনতা ,শিক্ষাই মূল্যবোধ। বাঁকুড়ার লক্ষ্মীর কাছে তার নিরক্ষর জীবনের চেয়ে এই পড়াশোনা শেখার অভিযান অনেকটাই উৎকৃষ্ট বলে মনে করছেন তিনি। ওন্দা যুব সমাজের এই পাঠশালায় গেলে এখনও দেখতে পাবেন লক্ষ্মী মালকে কবিতা আওড়াতে।
Neelanjan Banerjee