পরিবারে অবহেলা, মানসিক যন্ত্রণা আর নিঃসঙ্গতা নিয়ে বহু প্রবীণ মানুষের শান্তিতে দিন কাটানোর কোনও নিরাপদ স্থান ছিল না। সেই অভাব থেকেই জন্ম নেয় এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হয় এই মানবিক যাত্রা। বাঁকুড়ার একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি নিজেদের উদ্যোগে, ব্যক্তিগত অর্থসাহায্য ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের সহায়তায় গড়ে তোলেন এই বৃদ্ধাশ্রম। প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যতম ভূমিকা ছিল প্রখ্যাত চিকিৎসক ও সমাজসেবী ডক্টর লালমোহন গাঙ্গুলী, অধ্যাপক লীলাময় মুখোপাধ্যায়ের।

advertisement

আরও পড়ুন: চা-পকোড়া বিক্রি করেই আইনের পড়াশোনা! মাথার ওপর লোন, মেয়ের জেদ দেখে ধন্য ধন্য করছে সবাই 

বর্তমানে ডক্টর লালমোহন গাঙ্গুলীর পুত্র উজ্জ্বল গাঙ্গুলী এই আশ্রমের পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। উজ্জ্বল গাঙ্গুলী জানান, এই আশ্রমের জন্য জমি দান করেছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও ব্যবসায়ী বিষ্ণু বাজোরিয়া। সেই দান আজ বহু প্রবীণ মানুষের জীবনে আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে আশ্রমে রয়েছে মোট ২৩টি ঘর। প্রতিটি ঘরেই রয়েছে আলাদা বাথরুম। যাতে প্রবীণদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা হয় স্বাচ্ছন্দ্যময় ও মর্যাদাপূর্ণ। ভরতি হওয়ার সময় এককালীন ডেভেলপমেন্ট চার্জ হিসেবে নেওয়া হয় ৪০ হাজার টাকা। মাসিক খরচ ৬,৫০০ টাকা।

advertisement

View More

আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন

এছাড়া এককালীন ১০ হাজার টাকা মেডিকেল ফি নেওয়া হয়, যা আশ্রম ছাড়ার সময় ফেরত দেওয়া হয়। এই মুহূর্তে আশ্রমে রয়েছেন ১৯ জন আবাসিক। শুধু বাঁকুড়া জেলা থেকেই নয়, শিলিগুড়ির মত দূরবর্তী এলাকা থেকেও প্রবীণরা এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। যাঁরা প্রচণ্ড যন্ত্রণা নিয়ে এখানে আসেন, কয়েক বছর থাকার পর যখন পরিবারের কাছে ফিরে যান বা চিরবিদায় নেন, তখন তাঁদের চোখে জল দেখা যায়। সেই জল কখনও কৃতজ্ঞতার, কখনও শান্তির। কারণ এই আশ্রমের মূল মন্ত্র একটাই, মানুষকে আনন্দে রাখা, সম্মান দিয়ে বাঁচতে শেখান। ক্ষীরোদ প্রসাদ বিদ্যা বিনোদ বিশ্বাশ্রম আজ প্রমাণ করে দিচ্ছে, বৃদ্ধাশ্রম মানেই শুধুই শেষ ঠিকানা নয়, এও হতে পারে জীবনের নতুন শুরু।

advertisement