রাজ্যের হাতেই (Bangla News) রয়েছে বন্দরের (Port) জন্যে জমি। ইতিমধ্যেই জমি চিহ্নিতকরণ করে ফেলেছে সরকার। রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন দফতর তাজপুর বন্দর তৈরির জন্য যে গ্লোবাল টেন্ডার ডেকেছে তার আবেদন জমা দিতে হবে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে। সেই আবেদন খতিয়ে দেখে নির্মাণকারী সংস্থাকে বরাত দেওয়া হবে। ১৬,০০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য ৬ হাজার কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে রাজ্যের তরফে। প্রত্যক্ষভাবে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। প্রথম পর্যায়ে ছ'টি বার্থ ও পরের পর্যায়ে আরো নটি বার্থ তৈরি হবে এই বন্দরে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে তৈরি হবে বন্দর। নির্মানকারী সংস্থাকে ৯৯ বছরের জন্য বন্দর লিজ দেওয়া হবে। এই বন্দরের সঙ্গে নিকটতম হাইওয়ে যোগ করে দেওয়া হবে।
advertisement
প্রসঙ্গত, পূর্ব মেদিনীপুরে কোলাঘাট (Kolaghat) থেকে দিঘা (Digha) পর্যন্ত জাতীয় সড়ক (National Highway) সম্প্রসারণ শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সঙ্গে নয়া লাইনের মাধ্যমে যোগাযোগের ব্যবস্থা করবে রাজ্য। সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩৫০ মিটার প্রস্থ ও প্রায় ১৬ মিটার নাব্যতা থাকায় তাজপুর একটি গভীর সমুদ্র বন্দর হিসাবে কাজ করতে পারবে। ২০১৭ সালে প্রথম এই বন্দর তৈরির কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় ঠিক হয়েছিল কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে এই বন্দর তৈরি করা হবে। এমনকি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নিজেদের অধিকাংশ শেয়ার ও কেন্দ্রকে দিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র এই বন্দর নিয়ে টালবাহানা চালানোয় শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালের শেষের দিকে রাজ্য সরকার নিজেই এই বন্দর তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রসঙ্গত শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর নদী-বন্দর হওয়ায় ও তার ক্যাচমেন্ট এরিয়ার নাব্যতা কম হওয়ায় বড় আকারের জাহাজ এখানে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে ব্যবসায়ীদের কাছে ক্রমশ গ্রহণযোগ্যতা কমছে কলকাতা বন্দরের একাধিক বার্থের। অন্যদিকে, হলদিয়া বন্দর বলা হলেও এটা মূলত কলকাতা বন্দরের দূরবর্তী ডক হিসাবেই কাজ করে। ১২টি বার্থ থাকলেও নাব্যতা মাত্র ৬/৮ মিটার। ফলে বড় ধরনের কার্গো শিপ হলদিয়া বন্দরেও ঢুকতেও সমস্যা হয়। স্যান্ডহেডে চলে শিপ-টু-শিপ ট্রান্সফার। সেই তুলনায় প্রস্তাবিত তাজপুর বন্দরের নাব্যতা ১৬ মিটার অনেকটাই বেশি। এইসব কারণে তাজপুর বন্দর তৈরি হয়ে গেলে তা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সমুদ্র বানিজ্যে বিশেষ জায়গা করে নিতে পারবে বলেই আশাবাদী রাজ্য প্রশাসন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানিয়েছিলেন তাঁরা নিজেরাই এই বন্দর তৈরির কাজ করবে। গ্লোবাল টেন্ডার ডাকার মাধ্যমে সেই কাজই শুরু হল বলে মনে করা হচ্ছে। এখন দেখার কোন কোন সংস্থা বন্দর নির্মাণে আগ্রহ দেখায়।
ABIR GHOSHAL