লাগাতার প্রচার সত্বেও প্রশাসনের নজর এড়িয়ে রমরমিয়ে চলছে রক্তের 'দালাল' চক্র। বহরমপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন হরিহরপাড়ার এক রোগীর অস্ত্রোপচারের জন্য রক্ত প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ব্লাডব্যাঙ্কে রক্ত নেই। ফোন মারফত রক্তের সন্ধান পান ওই রোগীর জামাই। শুক্রবার বহরমপুরের পঞ্চাননতলা মোড়ে এক ব্যক্তি সেই রক্ত তাঁকে দিতে আসে। আর তখনই অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। জিজ্ঞাসাবাদ করতে রোগীর আত্মীয় রাকিবুল শেখ বলেন, '' চিকিৎসার জন্য রক্তের প্রয়োজন, কিন্তু রক্ত পাচ্ছিলাম না। সেই কারণে ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে রক্ত কিনেছি। প্রথমে ২৫০০ টাকা দিয়েছিলাম। রক্ত হাতে পেয়ে আরও ৫০০টাকা দিয়েছি।''
advertisement
প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে রক্ত বিক্রির কথা স্বীকার করে নেয় লালবাগের বাসিন্দা অভিযুক্ত সিদ্ধান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। বলে, '' গত ২ বছর ধরে রক্ত বিক্রি করছি। লালবাগের জয়ন্ত চৌধুরী, হরিহরপাড়ার সাহাবুল খান-সহ আরও অনেকেই এই দালাল চক্রে যুক্ত রয়েছে। আমাদের খোঁজ দেওয়া হলে, আমরা রক্ত নিয়ে এসে টাকার বিনিময়ে রোগীর আত্মীয়দের রক্ত দিয়ে দিই।'' হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীর আত্মীয় সইবুর আলি বলেন, '' চিকিৎসার জন্য রক্তের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ব্লাডব্যাঙ্কে রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না। সেই কারণেই একপ্রকার বাধ্য হয়েই দালালদের থেকে ৫-৭হাজার টাকার বিনিময়েও আমাদের রক্ত কিনতে হচ্ছে।'' খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরাও। যদিও এই বিষয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ও হাসপাতালের এমএসভিপি ডঃ অমিও কুমার বেরা বলেন, '' লাগাতার প্রচার করা সত্বেও সাধারণ মানুষদের মধ্যে সচেতনার অভাব রয়েছে। রক্তের ঘাটতি মেটাতে জেলা প্রশাসন তৎপরতার সঙ্গে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করছে। দালাল চক্রের হাত থেকে বাঁচতে হলে সাধারণ মানুষকে আরও বেশি করে সচেতন থাকতে হবে৷''