ভাঙড়ের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের দুই শিবিরের নেতা হিসেবে পরিচিত আরাবুল ইসলাম এবং কাইজার আহমেদ৷ দু পক্ষের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বার বার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভাঙড়৷ পরস্পরের বিরুদ্ধে তোপও দেগেছেন দুই নেতা৷ ভাঙড় নিজেদের দখলে থাকলেও আরাবুল-কাইজারের বিবাদ তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বেরও মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়৷ দুই পক্ষকে সামাল দিতে একসময় যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে পুলিশ প্রশাসনকেও৷
advertisement
যদিও ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লাকে তৃণমূল কংগ্রেস ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক নিয়োগ করার পর থেকেই ভাঙড়ের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়৷ এলাকার দখল নিয়ে শওকত অনুগামীদের সঙ্গে একদিকে আরাবুল গোষ্ঠী, আবার কাইজারের দলবলের সংঘাত তৈরি হয়৷ কয়েক দিন আগে ঘটকপুকুকে কাইজার আহমেদের অফিস এবং পরে বাড়িতে হামলা এবং বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে শওকত ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে৷ শওকতের নেতৃত্বেই তাঁর পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ কাইজারের৷ এমন কি, বাড়িতে হামলার সময় তাঁকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ৷ ভাঙড়ের রাজনীতিতে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে শওকতের বিরুদ্ধে এর আগে সরব হয়েছেন আরাবুলও৷ কাইজারের বাড়ি এবং অফিসে হামলার পর দূরত্ব মিটিয়ে এলাকা রাশ হাতে রাখতে ফের একজোট হন দুই নেতা৷
জোড়া হামলার পরেও পুলিশ শওকত মোল্লা অথবা তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ কাইজার আহমেদের৷ এরই প্রতিবাদে আজ ভাঙড় থানায় কাইজার ও আরাবুলের উপস্থিতিতে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা ছিলো। পুলিশ অনুমতি না পাওয়ায় ঘটকপুকুরে কাইজারের ভাঙা পার্টি অফিসের সামনে বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত হয়৷ তাতেও বাধ সাধে পুলিশ৷ এর পরই কর্মী সমর্থকদের নিয়ে আরাবুল ইসলামের বাড়িতে এসে একসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করেন কাইজার আহমেদ৷
ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লার নাম না করেই কাইজার বলেন, ‘কয়েকজন চোর ছাড়া কোন সাধারণ মানুষ শওকত মোল্লার সঙ্গে নেই। উনি শুধু লাশের রাজনীতি করেন। অন্য জায়গা থেকে ভাঙরে এসে শুধুই মানুষ খুন করছেন। আমাকেও খুন করতে চেয়েছিলেন৷ আমার অফিসে হামলা হয়েছে। পুলিশ এখনও নীরব, কোনও পদক্ষেপ করেনি, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা জন্য আমি এবার আদালতের দারস্থ হব।’
আরাবুল ইসলামও বলেন, ‘ভাঙরে দলটাকে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আজ পুরনো লোকেদের সরিয়ে দিয়ে কয়েকজন তোলাবাজকে নিয়ে উনি দল চালাচ্ছেন। সেটা আর হতে দেব না। ২০২৬-এ শওকত মোল্লা ছাড়া ভাঙরে লড়াই করা হবে।’ যদিও আরাবুল- কাইজারের তোলা অভিযোগের পাল্টা শওকত মোল্লার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷
