বৃদ্ধার দুই ছেলে, দুই মেয়ে সকলেই বিবাহিত৷ ছেলে বৌমা নাতি-নাতনি নিয়ে একেবারে ভরা সংসার। তবুও বৃদ্ধার ঠাই কুঁড়েঘরে। অভিযোগ ছেলে ও বউমার বৃদ্ধার দেখাশোনা করে না। বিগত ১০ বছর ধরে একা একটি কুঁড়েঘরে বসবাস করেছেন ওই বৃদ্ধা। এতদিন হাত পুড়িয়ে নিজেই রান্না করে এসেছেন৷ এখন বয়সের ভারে যবুথবু। এই অমানবিক ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার সোনাখালি গ্রামের। বৃদ্ধার নাম নিহারীবালা মাল, বয়স প্রায় ৯০ এর কাছাকাছি। পাড়া-প্রতিবেশী এমনকি গ্রামের সবাই জানেন ওই বৃদ্ধাকে বাড়ি ছাড়া করেছে তাঁর ছেলে বউমারা।
advertisement
আরও পড়ুন Viral: অধ্যক্ষের লেটারহেডে লাভ লেটার! কে লিখল প্রেমের চিঠি? কী লেখা তাতে?
ভিটের নিচে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় বানানো একটি কুঁড়েঘরে বসবাস করেছেন তিনি। কখনও গ্রামের সালিশে সভা, কখনও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ সমস্যার সমাধান হয়নি। অনেকদিন আগেই বৃদ্ধার স্বামী মারা গিয়েছে। বৃদ্ধার এহেন পরিস্থিতি দেখে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নিজের সম্পত্তির এক অংশ বিক্রি করে সেই টাকায় কোনও মতে সংসার চলছে তাঁর, মেলেনি কোন সরকারি সাহায্য।
বৃদ্ধার দেখাশোনার জন্য প্রতিবেশীরাই এক পরিচারিকা জোগাড় করে দিয়েছেন। কেন তাঁকে এভাবে থাকতে হচ্ছে? এ বিষয়ে বৃদ্ধার বড় ছেলে নরোত্তম মাল আমতা আমতা করে বলেন ‘আমি মায়ের কোন সম্পত্তির ভাগ পাইনি, তাই মাকে দেখাশোনা করিনি।’ তবে তিনি প্রশ্ন তোলেন তার ছোট ভাইয়ের আচরণ নিয়ে৷
আরও পড়ুনDigha Weather Update: বছর শুরুতেই আবহাওয়া ব্যাপক ধামকা! হাওয়া বদলের সম্ভাবনা
একই বিষয়ে ছোট ছেলে উত্তম মালের পরিবারের কাছে জানতে চাওয়া হলে প্রথমে মুখ খুলতে না চাইলেও পরে ছোট বৌমা ঝর্না মাল বলেন যে তাঁর শাশুড়ি তাঁদের কাছে থাকতে চাননি৷ তিনি নিজের ইচ্ছায় একাই থাকেন। প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গিয়েছে বৃদ্ধার সম্পত্তি বিক্রির কিছু টাকা(৩৬হাজার) এখনও অ্যাকাউন্টে অবশিষ্ট ছিল। সেই টাকাও ছোট ছেলে তুলে নিয়েছে। পরিবর্তে পরিচারিকা না আসায় খেয়াল খুশি ছোট বউমা তাঁর দেখাশোনা করছে মাঝে মধ্যে। তবে এই কনকনে ঠান্ডার মধ্যেও বৃদ্ধাকে একাই একটি কুঁড়েঘরে বসবাস করতে হচ্ছে। তবুও ছেলেরা কেউই মাকে নিজেদের পাকা বাড়িতে নিয়ে যেতে চান না।
দুই ছেলে সোনার কাজ করেন,দুজনেরই স্বচ্ছল অবস্থা, তবুও মায়ের এই পরিণতি। তিনি কোন সরকারি ভাতাও পান না বৃদ্ধা? প্রতিবেশীরা যথাসাধ্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বৃদ্ধার দেখাশোনার দায়িত্ব কার? এই বিষয়ে অনেকবার গ্রাম সভাও বসেছে, থানা পুলিশ পর্যন্ত হয়েছে তবুও নিজেদের জায়গায় অনর ছেলে বউমারা। এক কথায় বৃদ্ধা মায়ের করুণ পরিণতি।
সুকান্ত চক্রবর্তী
