এটি আউশগ্রামের বোম্মান সাহেবের মেলা। এই মেলায় এসে মিষ্টি না কিনে কেউ বাড়ি ফেরেন না। যার যতটা সাধ্য, মিষ্টি কেনেন ততটাই। অনেকে মেলায় মিষ্টি খেয়ে পেট ভরান, তারপর নিয়ে যান বাড়ির সকলের জন্য। শনিবার থেকে শুরু হয়েছে ওই মেলা। প্রথম দিনে প্রায় সাত লক্ষ টাকার মিষ্টি বিক্রি হয়েছে।
advertisement
বিভিন্ন মাপের রসগোল্লা, রাজভোগ, ল্যাংচা, পান্তুয়া, জিলিপি ছাড়াও লবঙ্গলতিকা, বালুসাই, খাজা, গজা, ক্ষীরের চপের মতো মিষ্টি বিক্রি হয়। এর এক জন কয়েক হাজার টাকার মিষ্টিও কেনেন। বিক্রেতাদের দাবি, প্রথম দিনে স্থানীয় বাসিন্দারা তো বটেই দূর থেকেও বহু মানুষ মেলায় মিষ্টি কিনতে এসেছিলেন। সে কারণেই এ বছর সব মিলিয়ে প্রায় সাত লক্ষ টাকার মিষ্টি বিক্রি হয়েছে বলে দাবি মেলা কমিটির কর্মকর্তা থেকে ব্যবসায়ীদের একাংশের। সব মিষ্টি চোখের নিমেষে বিক্রি হয়ে যাওয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরা।
কথিত আছে, পীর রহমান সাহেব আউশগ্রামের গোপ রাজাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে নরবলি বন্ধ করেছিলেন। পৌষ সংক্রান্তির আগের দিন রাজার সঙ্গে যুদ্ধে তিনি শহীদ হন। ওই দিনটিকে স্মরণে রেখেই মেলা বসে। সেখান থেকেই মেলাটি পীর রহমান সাহেবের মেলা বা বোম্মান সাহেবের মেলা নামে পরিচিত।
পীরের মাজারে চাদর দিয়ে প্রার্থনা করেন অনেকে। ব্যবসায়ীরা রকমারি মিষ্টি নিবেদন করেন পীরকে। এর পরেই বিক্রিবাটা শুরু করেন তাঁরা। এলাকাবাসীরা পীর সাহেবের প্রসাদ হিসেবেই ওই মিষ্টি কেনেন। মেলা কমিটির কর্মকর্তারা জানালেন, মেলা শুরুর দিন দশেক আগে থেকেই ব্যবসায়ী, কারিগরেরা এসে মিষ্টি তৈরি শুরু করেন। দু’দিনের মধ্যেই সব শেষ হয়ে যায়। মিষ্টি তৈরির পরে বোম্মান সাহেবকে নিবেদন করে তার পরেই বিক্রিবাটা শুরু হয়। মেলা শুরুর দিনে বিকেলে ঘণ্টা দু’য়েক ধরে মিষ্টি বিক্রি হয়। জেলা, ভিন্ন জেলা থেকে হাজার খানেক মানুষ আসেন। এ বছর প্রতিটি দোকানে গড়ে পঞ্চাশ-ষাট হাজার টাকার মিষ্টি বিক্রি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।