প্রায় চার শতাব্দী আগে তৎকালীন জমিদার ঈশান রায়চৌধুরী স্বপ্নাদেশ পান — জঙ্গলের গভীরে একটি ঘটের ভেতর বন্দি দেবী কালী রয়েছেন। সেই ঘটটি উদ্ধার করে তাঁকে প্রতিষ্ঠা করার নির্দেশ দেন দেবী নিজেই। স্বপ্নাদেশের পরই ঈশান রায়চৌধুরী ইছামতির কূলে জঙ্গলের ভেতর থেকে ঘট উদ্ধার করে ছোট একটি চালা বানিয়ে শুরু করেন দেবী কুলেশ্বরীর পুজো। তখন অবিভক্ত ভারতের সাতক্ষীরার বাসিন্দা রামকানাই মৈত্র নামে এক পুরোহিতকে এনে পুজোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই সময় থেকে আজও পর্যন্ত তাঁরই বংশধরেরা ১৫ পুরুষ ধরে পুরনো সমস্ত নিয়ম-রীতি মেনে এই দেবীর পুজো করে আসছেন।
advertisement
প্রতিদিন ভোগ হিসেবে দেবীকে নিবেদন করা হয় পায়েস ও খিচুড়ি। সেই সঙ্গে চলে বলি প্রথা, যেখানে ভেড়া ও ছাগল উৎসর্গ করা হয় দেবীর উদ্দেশ্যে। আশ্চর্যের বিষয়, ৪০০ বছর আগের সেই বলি দেওয়ার কাঠ আজও মন্দির প্রাঙ্গণে সংরক্ষিত রয়েছে, ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে।
দেবীর মন্দিরের ছাদের উপরে একটি ছোট গর্ত রাখা হয়েছে—স্থানীয় বিশ্বাস, যখন মন্দির বন্ধ থাকে, সেই গর্ত দিয়েই দেবী কুলেশ্বরী বাইরে আসেন বা ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রতি বছর অগণিত ভক্ত এই অলৌকিক শক্তির সাক্ষী হতে টাকিতে আসেন। ইছামতির তীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা এই কুলেশ্বরী মন্দির আজও যেন টাকির আদি ঐতিহ্যের এক জীবন্ত প্রতীক, যেখানে ভক্তি, ইতিহাস আর বিশ্বাস মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে চার শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে।