উত্তর ২৪ পরগনা ভাটপাড়ার বাসিন্দা সংগ্রাম ভট্টাচার্য, পেশায় মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ। গত শুক্রবার, ১৪ অগাস্ট কল্যাণী থেকে বাড়ি ফেরার পথে মোটরবাইকের স্ট্যান্ড পড়ে থাকায় রাস্তায় একটি বাম্পারে বাইক থেকে ছিটকে পড়ে যায়,প্রথমে কল্যাণী জহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতাল সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ইএম বাইপাসের অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার সকালে ব্রেন ডেথ পর্যায়ে পৌঁছে যায় ওই তরুণ। স্বাস্থ্য ভবনের ব্রেন ডেথ কমিটি অ্যাপনিয়া টেস্ট করে জানিয়ে দেয়, ব্রেন ডেথ হয়ে গিয়েছে সংগ্রামের। নিয়ম অনুযায়ী রবিবার সন্ধ্যা পৌনে আটটা নাগাদ চূড়ান্তভাবে ব্রেন ডেথ ঘোষণা করে ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি। এরপরই অঙ্গ দানে সম্মতি জানায় সংগ্রামের পরিবার।
advertisement
এরপরই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় অঙ্গ গ্রহীতাদের ম্যাচিং।ত্রিপুরা আগরতলার বাসিন্দা ৫৯ বছর বয়সী এক প্রবীণকে বিমানে করে আনা হয় কলকাতায়।অ্যাপোলো হাসপাতালে তার কিডনি লিভার প্রতিস্থাপিত করা হবে।হাওড়া লিলুয়া বাসিন্দা ২৯ বছর বয়সী এক যুবককে এপোলো হাসপাতালেই কিডনি প্রতিস্থাপিত করা হবে।অপর একটি কিডনি গ্রিন করিডোর করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে সেখানে সোনারপুরের বাসিন্দা এক ব্যক্তির শরীরে তা প্রতিস্থাপিত করা হবে। আর হৃদযন্ত্র বা হার্ট গ্রিন করিডোর পড়ে হাওড়া নারায়না হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে সেখানে হাওড়া এই বাসিন্দা ১৭ বছর বয়সী এক যুবতীর শরীরে তা প্রতিস্থাপিত করা হবে।এছাড়া চোখ ব্যারাকপুর দিশা হাসপাতাল এ দান করা হয়েছে এবং ত্বক এসএসকেএম হাসপাতালে দান করা হয়েছে।
করনা আবহেগোটা প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া জন্য যে চিকিৎসক-নার্স স্বাস্থ্যকর্মীরা জড়িত থাকবে তাদের প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করা হয়।৫৩ জনের করোনা পরীক্ষা করার পর প্রত্যেকের রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরই তারা এই গোটা ট্রান্সপ্লান্ট বা প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়াও প্রত্যেক গ্রহীতার করনা পরীক্ষাও করা হয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরে যে করোনা পর্ব চলছে, তারমধ্যে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল এই মরণোত্তর অঙ্গদান। দু'বছর আগে বিয়ে হয় সংগ্রামের। সমস্ত শোক নিয়েও আরো অনেক মানুষের জীবন বাঁচাতে সংগ্রামের স্ত্রী সহ গোটা পরিবার অঙ্গদান করে একটা কথাই প্রমাণ করলো মানুষ মানুষের জন্য।
ABHIJIT CHANDA
