TRENDING:

করোনার জের, বন্ধ হয়ে গেল কাঁথির ডেমুরিয়ার ৩০০ বছরের প্রাচীন রথযাত্রাও!

Last Updated:

চলতি বছরে করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে প্রাচীন এই রথযাত্রা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
SUJIT BHOWMIK
advertisement

#কাঁথি: করোনা সংক্রমণ এড়ানোর লক্ষ্যে এ বার বন্ধ থাকবে  ৩০০ বছরের প্রাচীন কাঁথির ডেমুরিয়ার রথযাত্রা উৎসবও।  ইতিমধ্যেই জেলার অন্যান্য  রথযাত্রা উৎসব বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বার জমায়েত এড়ানোর জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো ৩০০ বছরের প্রাচীন ডেমুরিয়ার রথ। রথ টানা বন্ধের পাশাপাশি এ বছর বসবে না রথের মেলাও। তবে প্রভু জগন্নাথের ভক্তরা রথের দিন প্রভুকে দর্শন করতে পারবেন। মূল রথ ও ফেরত রথের দিন প্রাচীন রীতি মেনে রাজ বেশে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে তোলা হবে রথের ওপর। সেখানেই সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে দেব দর্শন করতে পারবেন ভক্তরা। রথ পরিচালন কমিটির সদস্যরা  বৈঠক করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

advertisement

ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে ওড়িশার বাসিন্দা মগ্নীনারায়ন চৌধুরী কাঁথির ডেমুরিয়াতে বসবাসের উদ্দেশ্যে আসেন। তাঁর ইচ্ছে ছিল রথের সময় তীর্থযাত্রীদের পুরী দর্শনে নিয়ে যাওয়ার। নিজের এই ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপায়ন করতে প্রত‍্যেক বছরই তিনি বহু তীর্থযাত্রীকে নিয়ে হাঁটাপথে পুরী দর্শনে যেতেন। পরে বৃদ্ধ হয়ে গিয়েও নিজের কাজ বন্ধ করেননি তিনি। কিন্তু একবার তীর্থযাত্রীদের পুরী নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে হঠাৎই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কথিত আছে, অসুস্থ অবস্থাতেই তিনি স্বপ্নের মধ্যে দর্শন পান প্রভু জগন্নাথদেবের। প্রভু জগন্নাথদেব সেদিনই মগ্নীনারায়ণকে স্বপ্নের মধ্যে বলেন, কষ্ট করে পুরী না গিয়ে তিনি যেন নিজের বাড়ির কাছেই জগন্নাথদেবের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। তা করলে মগ্নীনারায়ণের পুরীধাম যাত্রার সমান পুণ্যলাভ হবে। যা শুনে মগ্নীনারায়ণ বাড়ি ফিরে গিয়ে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার মাটির মূর্তি গড়ে পূজোপাঠ শুরু করেন।

advertisement

এরপর মগ্নীনারায়ণের মৃত্যুর পরে ১৭৪৩ সালে বর্গীরা অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা দখল করে নেয়। ১৭৫২ সাল পর্যন্ত এই দখল অব‍্যাহত থাকে। বর্গীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও তাঁরা এই সময় প্রচুর পরিমাণে মন্দির লুঠ করতো। সেই সময় মগ্নীনারায়ণের উত্তরাধিকারীরা জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার নিরাপত্তার জন্য প্রতিবেশী করুণাকরণ পাহাড়ির বাড়িতে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার মূর্তি গুলিকে লুকিয়ে রাখেন। প্রত‍্যেকদিন মগ্নীনারায়ণের পরিবারের লোকজনেরা ভোগ রান্না করে সেখানেই জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার কাছে নিবেদন করে যেতেন। এরপর কালক্রমে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার মূর্তি আর মগ্নীনারায়ণের বাড়িতে ফিরে আসেনি। তখন জলামুঠের জমিদার যাদবরাম রায় জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে প্রভূত পরিমাণে ভূ-সম্পত্তিতে ভূষিত করেন এবং করুণাকরণ পাহাড়িরা চৌধুরী উপাধি নিয়ে জগন্নাথদেবের সেবার কাজে নিয়োজিত থাকেন। জগন্নাথদেবের সে দিনের সেই মাটির মন্দির আজ পাকাপোক্ত ভাবে গড়ে উঠেছে। কিন্তু সে দিনের নিয়ম মেনে আজও মগ্নীনারায়ণের পরিবারের লোকজনেরা ভোগ রান্না করে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার কাছে নিবেদন করেন এবং করুণাকরণের পরিবারের লোকজনেরা আজও জগন্নাথদেবের সেবাদাতা হিসেবে নিযুক্ত আছেন।

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
ইউটিউব দেখেই কামাল করছে এই কিশোর, দেখলে আপনিও চোখ সরাতে পারবেন না
আরও দেখুন

প্রত‍্যেকবছর পুরীর রীতি মেনেই রথের দিন তিনটি পৃথক রথে চড়ে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা মাসির বাড়িতে যাত্রা করেন। কিন্তু চলতি বছরে করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে প্রাচীন এই রথযাত্রা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে রথযাত্রা বন্ধ থাকলেও মূল রথ ও ফেরত রথের দিন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে দর্শন করতে পারবেন দর্শনার্থীরা। রথযাত্রা পরিচালন কমিটির সম্পাদক তমালতরু দাস মহাপাত্র বলেন, "করোনা সংক্রামণের কথা মাথায় রেখেই এ বছর আমরা রথযাত্রা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে মূল রথ ও ফেরত রথের দিন সামাজিক দূরত্ব মেনে ভক্তরা জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে দর্শন করতে পারবেন"

advertisement

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
করোনার জের, বন্ধ হয়ে গেল কাঁথির ডেমুরিয়ার ৩০০ বছরের প্রাচীন রথযাত্রাও!
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল