মূল ফটকে আজও উজ্জ্বল হস্তী জোড়ার চিহ্ন। খিলানের বারান্দা এখনও বলে আড়াইশো বছর আগের জমিদারির গল্প। পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষীরপাই। আর এই বাড়িটা পাহাড়িদের। একসময় এই বাড়ি পরিচিত ছিল জমিদার বাড়ি বলেই। কাল বদলেছে। পালা বদলও হয়েছে। কিন্তু বনেদিয়ানা এখনও রয়ে গিয়েছে।
পাহাড়িদের প্রথম পুরুষ ছিলেন বংশীধর। এই বাড়িতেই প্রতিষ্ঠিত অষ্টধাতুর সিংহবাহিনী। ঠিক বাড়ির মেয়ের মতো। নিত্যপুজোতেই পূজিত হন দেবী। কিন্তু শরতের মেঘে নতুন করে সাজ মায়ের।
advertisement
প্রতিবছর রাধা অষ্টমীতে মায়ের গায়ে মাটি দিয়ে পুজোর কাজ শুরু করে পাহাড়ি পরিবার। এই সেই মঞ্চ যেখানে পঞ্চমীর দিন অধিষ্ঠিত হন উমা। তার আগে নতুন সাজে তৈরি হয়ে থাকে কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী। পুজোর চারটে দিন এই বাড়ি আলোয় সাজে। আর মেয়ের জন্য রাঁধতে বসেন বাড়ির বউ জ্যোৎস্না।
একসময় ইংরেজরা আসতেন এই বাড়িতে। রানি ভিক্টোরিয়ার ফলক আজও আছে। বৈষ্ণব মতে পুজো করা হয় সিংহবাহিনীকে। আড়াইশো বছরের রীতি মেনে নবমীর দিন হয়টি নটি বলি।
ভদ্রলোকের নাম সুশীল চক্রবর্তী। সিংহবাহিনীর নিত্যপুজো করেন। এই বাড়ির রীতি আছে বংশপরম্পরায় চলে আসছে উমার সেবা। ঠিক তেমনই, তিন পুরুষ ধরে সিংহবাহিনীর নিত্যপুজো করছেন সুশীল।
দিন কমছে। ব্যস্ততা বাড়ছে। কড়িকাঠে ঝুলে থাকা এই বাতি আর কয়েকদিন পর জ্বলে উঠবে। ফের আলোয় সাজবে জমিদার বাড়ি।