সদ্য ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবনে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত ত্রাণ সামগ্রী যাচ্ছে। সেইসব ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে প্রধান হল পানীয় জলের বোতল। ১ লিটার-২ লিটার থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরিমাপের লক্ষ লক্ষ প্লাস্টিকের জলের বোতল ঢুকেছে সুন্দরবনের বিভিন্ন দ্বীপে। সুন্দরবনের মতো দ্বীপে এইসব প্লাস্টিকের প্রভাবে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হবে, এমনটাই আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ থেকে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা! প্রশাসনের তরফ থেকেও এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে সেরকম ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। এর মধ্যেই বিশ্ব পরিবেশ দিবসে বারুইপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা সুন্দরবনের বিভিন্ন দ্বীপে ঘুরে ঘুরে পুরনো প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করলেন এবং কোন বাড়ি থেকে দশটি পুরনো প্লাস্টিকের বোতল ফিরিয়ে দিলে তারা নতুন একটি স্থায়ী পানীয় জলের বোতল প্রদান করছেন।
advertisement
বারুইপুরের চম্পাহাটি স্বাস্থ্যমেলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা সুন্দরবনের বিভিন্ন দ্বীপে ঘুরে-ঘুরে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করছেন এবং সেই সমস্ত দ্বীপে বাড়িতে ঘুরে ঘুরে প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করছেন এবং বিনিময়ে নতুন একটি স্থায়ী পানীয় জলের বোতল প্রদান করছেন। এই সংগঠনের কর্ণধার প্রসেনজিৎ মিস্ত্রি বলেন, 'কলকাতা থেকে একাধিক সংগঠন কয়েক দিনের মধ্যে লক্ষ লক্ষ পানীয় জলের বোতল সুন্দরবনে নিয়ে এসেছেন। সেই সমস্ত প্লাস্টিকের বোতল গোটা সুন্দরবনের বিভিন্ন দ্বীপে ছড়িয়ে পড়েছে। আগামী দিনে এর ফলে সুন্দরবনের মতো দ্বীপে কতটা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে, সেটা সবাই বুঝতে পারছে। সুন্দরবনে এই মুহূর্তে আর পানীয় জলের অভাব নেই। সুতরাং প্রশাসনের উচিত এই মুহূর্তে ১ লিটার ২ লিটার ছোট পানীয় জলের বোতল সুন্দরবনের প্রবেশের ক্ষেত্রে কঠোর ভাবে নিষেধাজ্ঞা করা হোক। নইলে আগামী দিনে আমরা সুন্দরবনকে বাঁচাতে পারব না।' তিনি আরও বলেন, 'আমাদের সংগঠনের সদস্যরা বিশ্ব পরিবেশ দিবসে সুন্দরবনকে প্লাস্টিক মুক্ত করবার যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, আগামী দিনেও তা চলবে।' বিশ্ব পরিবেশ দিবসের দিন বারুইপুরের এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অভিনব প্রয়াসকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সুন্দরবনবাসী থেকে সাধারণ মানুষ এবং পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।
-----অর্পণ মণ্ডল
