তদন্তে জানা গিয়েছে সুমিত কুমার এবং ভরত কুমার (Bharat kumar) – দু’জনে একই ব্যক্তি। স্রেফ নাম অদলবদল করে অপকর্মের সঙ্গীদের আশ্রয় দেবে বলে নিউটাউনের (Newtown) সাপুরজির 'সুখবৃষ্টি' আবাসনের বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল সে। অন্তত এমনই দাবি তদন্তকারীদের। বুধবার দুপুরে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র থেকে ভরত কুমার গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন তাঁরা। আর তাতেই চোখ প্রায় কপালে গোয়েন্দাদের। বলা হচ্ছে, মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) ভরত কুমার বাংলায় এসে সুমিত কুমার নামে নিজের ভুয়ো নথি তৈরি করে নিউটাউনে ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়। তারপর জসপ্রীত এবং জয়পালকে রেখে ফিরে যায় সে। রাজারহাটের আবাসনে এই দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতীর উপস্থিতি নিয়ে উঠেছে বেশ কিছু প্রশ্ন। তাদের ব্যবহার করা গাড়িটি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে অনেক।
advertisement
প্রশ্ন ১) মধ্যপ্রদেশ যোগ কী ভাবে এবং কবে?
জানা গিয়েছে মে মাসে পঞ্জাব পুলিশের দুই এএসআইকে খুনের পর জসপ্রীতরা চার জন পালিয়ে আশ্রয় নেয় মধ্যপ্রদেশে। তারপর সেখান থেকে জসপ্রীত এবং জয়পালকে নিয়ে বাংলার নম্বরপ্লেট দেওয়া গাড়ি করে ঝাড়খণ্ড হয়ে বাংলায় আসে। আরও উল্লেখযোগ্য বিষয়, বাংলার নম্বরপ্লেট দেওয়া গাড়ি করেই তারা মধ্যপ্রদেশ থেকে ঝাড়খণ্ড হয়ে সোজা এ রাজ্যে প্রবেশ করে।
প্রশ্ন ২) মধ্যপ্রদেশ থেকে কীভাবে বাংলার গাড়ি তারা পেল?
তদন্তে জানা গিয়েছে, WBO24500R - এই নম্বরের গাড়িটির রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। মূলত বাংলার গাড়ি হিসেবে পরিবহণ বিভাগের কাছে তা নথিভুক্ত করা থাকলেও প্রায়ই ভিনরাজ্যে ঘুরে বেড়াত এই গাড়ি। নতুন করে রেজিস্ট্রেশন না করানোয় তা বাংলার গাড়ি হিসেবেই ছিল। তাই তাতে চড়ে এ রাজ্যে প্রবেশে কার্যত কোনও বাধাই পায়নি জসপ্রীতরা। মে মাসের ওই সময়ে জসপ্রীত এবং জয়পালের সঙ্গে এসেছিল ভরত কুমারও।
প্রশ্ন ৩) কীভাবে সুখবৃষ্টির মত আবাসনে ঠাঁই?
কলকাতা পৌঁছে ব্রোকার সুশান্ত সাহার মাধ্যমে নিউটাউনের ‘সুখবৃষ্টি’ আবাসনে এন্টালির বাসিন্দা আকবর আলির ২০১ নম্বর ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে জয়পাল, জসপ্রীত। ভরত ওরফে সুমিত কুমার ফিরে যায় মধ্যপ্রদেশে। আরও জানা গিয়েছে, এই ফ্ল্যাটে প্রবেশের অগ্রিম হিসেবে ২০ হাজার টাকা দিয়েছিল তারা। মাসিক ভাড়া ১০ হাজার টাকা। এরপর বুধবার দুপুরে গোয়ালিয়র থেকে ভরত ওরফে সুমিত কুমার গ্রেফতার হওয়ার পরপরই নিউটাউনের আবাসনে এসটিএফের অভিযান এবং ১৫ মিনিটের টানা গুলিযুদ্ধে ২ গ্যাংস্টার নিকেশ।
এদিকে, তদন্তের স্বার্থে বৃহস্পতিবার অকুস্থলে গিয়েছিল রাজ্য পুলিশের ফরেনসিক দল। ৫ জনের একটি দল সেখানে বেশ কয়েকঘণ্টা ছিল বলে খবর। ফিংগার প্রিন্ট ও ফুট প্রিন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, রক্তের নমুনা ও দুটি ফাটা বুলেটের নমুনা নিয়েছেন তাঁরা। অন্য কারও হাতের ছাপ আছে কি না। সেই তথ্য জানার জন্য এসব কিছু সংগ্রহ করেছেন ফরেনসিক দলটি।
