এ বছর তাঁদের থিম 'আফ্রিকার মানবজাতি'। কলা কল্পের দুর্গাপুজো শুধু সুন্দরবন নয়। স্থানীয় এলাকার পাশাপাশি অন্যান্য শহরতলিতেও বেশ পরিচিতি অর্জন করেছে। এ বছর ৪৪তম বর্ষে পদার্পণ করল এই পুজো। শাস্ত্রীয় রীতিনীতি মেনেই, নিষ্ঠা সহকারে হয়ে থাকে দুর্গাপুজো। তবে এবার শুধু মণ্ডপই নয়, প্রতিমাও তৈরি করা হচ্ছে আফ্রিকার জনজাতির আদলে। দেবী মাকেও দেখা যাবে আফ্রিকান সংস্কৃতির সঙ্গে সেজে উঠতে। আফ্রিকার মানব জাতির আদলে প্রতিমা তৈরি করছেন মৃৎশিল্পী রনিত পাল।
advertisement
শিল্পী জানান, 'আফ্রিকার জনজাতির সঙ্গে সাদৃশ্য রেখেই দেবী মায়ের রূপ ফুটিয়ে তোলা হবে'। বিগত বছর গুলির মতো এ বছরেও, শহুরে থিমের পুজোর সঙ্গে পাল্লা দিতে তৈরি হচ্ছে সুন্দরবনের পুজো কমিটিগুলি। মণ্ডপ শিল্পী মানস সাহা বলেন, "দর্শনার্থীরা মণ্ডপে প্রবেশ করলেই, তাঁদের মনে হবে যেন প্রবেশ করেছেন আফ্রিকার কোনও গ্রাম্য পরিবেশে। বিভিন্ন মডেলের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে সেখানকার জনজীবনের প্রতিচ্ছবি।"
ইতিমধ্যেই মণ্ডপে রং এর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আফ্রিকার আদিবাসী মানুষজনের নানান নকশাও এবারে মণ্ডপে তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি, আফ্রিকার আদিবাসী এলাকার জঙ্গলের একটি পরিবেশ সৃষ্টিরও প্রয়াস থাকছে এবারের থিমে। প্রায় ৩৫ জন কর্মী নিয়ে বাঁশ, বাটাম, প্লাইউড বোর্ড, চট, দড়ি, ফেলে দেওয়ার নানা বাদ্যযন্ত্র সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করে গড়ে তোলা হচ্ছে মণ্ডপ। কলা কল্পের পুজো কমিটির সম্পাদক বিশ্বনাথ সাহা জানান, "কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে খুব সমস্যার মধ্যেই মণ্ডপ তৈরির কাজ চলেছে। দু-একদিন একটু ভালো আবহাওয়া পাওয়া গিয়েছে। আবারও শোনা যাচ্ছে আবহাওয়া খারাপ হবে। সেই কারণে যত দ্রুত সম্ভব মণ্ডপের কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।"
আরও পড়ুন- মর্তের দেবীদের পরিচালনায় দুর্গাপুজো! তমলুকের মহিলারা কীভাবে শুরু করলেন উমার আরাধনা
সম্পূর্ণ কোভিড বিধি নিষেধ মেনেই করা হবে পুজো। থাকবে মাস্ক। বিতরণ করা হবে স্যানিটাইজার। মণ্ডপ চত্বরে একসঙ্গে ২০ জনের বেশি দর্শনার্থীকে প্রবেশ করানো হবে না বলেও জানানো হয় পূজা কমিটির পক্ষ থেকে। কলা কল্পের সভাপতি গোকুল মন্ডল, মুখ্য উপদেষ্টা শম্ভু সাহাদের তাই এখন নাওয়া-খাওয়ারও সময় নেই। রাত দিন জেগে কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও হাত লাগিয়েছেন প্যান্ডেলের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির কাজে। পুজোর কদিন দুঃস্থ শিশুদের বস্ত্র বিতরণ, বৃক্ষরোপণ সহ সামাজিক কাজের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে থাকে কলা কল্প দুর্গাপূজা উৎসব কমিটি। ফলে অন্যান্য পুজোগুলির পাশাপাশি এই পুজো বিশেষ আকর্ষণের তালিকায় থাকে ক্যানিংবাসীদের।
রুদ্র নারায়ন রায়
আরও পড়ুন- কাশীপুর রাজ পরিবারের ১৬ দিনের দুর্গাপুজো! নেপথ্যে রয়েছে বিশেষ গল্পকথা
