তাঁর ভক্তও অনুরাগীর সংখ্যায় আজও বিন্দুমাত্র ভাঁটা পড়েনি । তাঁর ভক্ত শুধু পর্দার ওপারের দর্শক ছিলেন না তাঁর সমসাময়িক অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও তাঁর অভিনয়ের গুণমুগ্ধ অনুরাগী ছিলেন । বিরল প্রতিভা ও পাহাড় প্রমাণ ব্যক্তিত্বকে তাঁর সহ অভিনেতা দিলীপ কুমার, রাজ কাপুর কুর্ণিশ জানিয়েছেন । মধুবালাও মীনা কুমার মধুর কণ্ঠস্বরের অনুরাগী ছিলেন । মীনা কুমারী সম্বন্ধে অমিতাভ বচ্চন বলেছেন - অভিনেত্রী হিসাবে মীনা কুমারী যা অর্জন করেছেন তা আগেও কেউ পারেনি আর আগামীদিনেও কেউ পারবে বলে মনে হয় না ।
advertisement
তাঁর সাফল্য সার্থকতা নতুন করে বলার কিছু নেই । তিনি ৪ বার ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন । ১৯৬৩ তে সর্বশ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী নমিনেশনের প্রতিটিতেই তাঁর নাম ছিল, সাহেব বিবি গোলামের জন্য সে বছর অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন । মীনা কুমারী অভিনেত্রী হতে চাননি বরং তিনি স্কুলে যেতে চাইতেন । কিন্তু তাঁর স্কুলের খরচ বহন করার ক্ষমতা পরিবারের ছিলনা ।
১৯৩৯ এ ৪ বছর বয়সে মীনা কুমারী প্রথম অভিনয় করেন বিজয় ভট্টের ছবিতে, পারিশ্রমিক হিসাবে পেয়েছিলেন ২৫ টাকা ।
মীনা কুমারী বায়োপিক তৈরিতে অনেক নির্দেশক ও প্রযোজক আগ্রহই দেখিয়েছেন । কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা পূর্ণতা পায়নি । প্রীতিশ নন্দী প্রয়াস করেছিলেন । চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষও রবিনা ট্যান্ডনকে দিয়ে প্রজেক্ট শুরু করে ছিলেন । পরবর্তী কালে মাধুরী দীক্ষিত, বিদ্যা বলন, কঙ্গনা রানায়তকে দিয়েও প্রচেষ্টা করা হয়েছিল । সম্প্রতি জানা গেছে করণ রাজদানের এক ছবিতে সানি লিওনিকে দিয়ে মীনা কুমারী চরিত্র চিত্রণের প্রচেষ্টা হয়েছিল ।
মীনা কুমারী যেমন ভাল অভিনেত্রী ছিলেন ঠিক তেমনই একজন ভাল কবিও ছিলেন । তাঁর কবিতার বইটি মৃত্যু আগে গীতিকার গুলজারের কাছে রেখে গিয়েছিলেন । গুলাজার মীনা কুমারী মৃত্য়ু পরবর্তী সময়ে তা প্রকাশ করেন । জানা গেছে গুলজার নির্দেশিত মেরে আপনে ছবিতে দেখানো হয়েছিল ।
ভারতীয় সিনেমার এক কিংবদন্তি নাম মীনা কুমারী । সময় যতই এগিয়ে যাক না কেন তাঁর কণ্ঠস্বর, হাসি, অভিনয়, ব্যক্তিত্ব সবই যেন দর্শকদের কাছে এক অন্যমাত্রা এনে দিয়েছিল । সাফল্যের শীর্ষে থেকেও তিনি ছিলেন মাটির কাছাকাছি । তাঁর সমকালীন শিল্পীরা বলতেন তিনি খুব বড় মনের মানুষ ছিলেন । ভারতীয় সিনেমায় মীনা কুমারীর অবদান কোনও ভাবেই ভোলা সম্ভব নয় । প্রতিটি দর্শকের মনে তাঁদের মীনা বেঁচে ছিলেন, আছেন ও থাকবেন ।