বিগত কয়েক বছর ধরে এভাবেই ভোট দিয়ে আসছেন কাটোয়া ২ ব্লকের চরবিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দারা। এই বিষয়ে চরবিষ্ণুপুর গ্রামের এক বাসিন্দা গুরুদাস সরকার বলেন, “বুথটা এখানেই ছিল। এবার ভাঙ্গনের কবলে পড়ে বেশিরভাগ মানুষই এখন ওপারে। প্রাইমারি স্কুল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র সবকিছুই ট্রান্সফার হয়ে ওদিকে চলে গেছে। এখন আমরা যে কজন মানুষ এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছি, আমাদেরও ভোটটা দিতে ওপারে যেতে হয়। এপারে, ওপারের তুলনায় অল্প কিছু জন মানুষ থাকার জন্য এখানে বুথ হয় না।”
advertisement
আরও পড়ুন ঃ টাকা না দিলে ভোট হবে না! কীসের টাকা? বর্ধমানে বিরাট শোরগোল
পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমার পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ভাগীরথী নদী। এখানে এই ভাগীরথী পূর্ব বর্ধমান ও নদীয়া জেলাকে ভাগ করেছে। ভাগীরথীর তীরবর্তী গ্রামগুলির অবস্থান বড় অদ্ভুত। এই এলাকায় ভাগীরথীর ডান পাশে অবস্থিত পূর্ব বর্ধমান জেলার সঙ্গে সংলগ্ন কিছু গ্রাম খাতায় কলমে নদীয়া জেলায়। আবার কোথাও নদীয়া জেলার গা ঘেঁষে থাকা কোন কোন গ্রাম পূর্ব বর্ধমানের অধীনে। তেমনই কাটোয়ার চরবিষ্ণুপুর গ্রামটি অবস্থানগতভাবে নদীয়ার দিকে হলেও, এটি পূর্ব বর্ধমান জেলার অংশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় সকল গ্রামবাসী একসাথে বসবাস করলেও, বর্তমানে ভাঙ্গনের জেরে বহু বাড়িঘর ভেঙে গিয়েছে। ফলে নদীর দুই পাড়ে বিচ্ছিন্নভাবে রয়ে গিয়েছে একই গ্রামের বাসিন্দারা। আরো জানা যায়, কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকের এই এলাকায় ভাঙ্গন চরম আকার নিয়েছে। বর্তমানে প্রায় সমগ্র গ্রাম ভাঙ্গনের কবলে। একসময় যেখানে কয়েকশো পরিবার বসবাস করতো, আজ সেখানে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবারের বাস।
ভাঙ্গনের কারণে সরকারীভাবে পাট্টা দিয়ে বহু পরিবারকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। চর বিষ্ণুপুর গ্রামে মোট ভোটারের সংখ্যা শ পাঁচেক। যাদের অধিকাংশই থাকেন নদীর এপারে। তাই নির্বাচন আসলে নৌকা করে নদী পেরিয়েই তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে যেতে হয়। ফলে নির্বাচনে এলে কোথাও গিয়ে বিশেষ লক্ষ্মীলাভ হয় নৌকার মাঝিদের।